শনিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২২

দেহ তত্ত্ব


দেহতত্বে পাচ মোকামে পাচ মহামানবের অবস্তান:-
১:মোকামে মাহমুদা - হযরত মোহাম্মদ (সঃ)
২:সুলতানুন নাসিরা - খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী (রঃ)
৩:মুওয়াহেদ মোকাম - বড়পির আবদুল কাদের জিলানি ( রঃ)
৪:মাকামে ইব্রাহিম - হযরত ইব্রাহিম (আঃ)
৫:ওরাওল ওরা মাকাম - ইমামা হাসান ও হোসেন (আ:)
দেহতত্ব বেহেস্তের চার নহরঃ
১। কাওসারের পানি = স্বচ্ছ বিবেক
২ । দুধের নহর = সুখ্য জ্ঞান
৩।মধুর নহর =খোদার সানিধ্য অনূভতি
৪।শারাভান্তহুরা =খোদার প্রেমের নেশারুপক অর্থকে ভাবার্থে প্রকাশ।
দেহতত্বে একিন সমুহ:-
১।বেল গায়েব = কর্ণ দারা
২।এলমল = গ্যান ধারা
৩।আইনুল = চোখের ধারা
৪।হাক্বুল = বিবেক ধারা
৫।হুওয়াল = মন দ্বারা
দেহতত্ব সৃষ্টির বিবরন:-
পুরুষের ১ = মন থেকে চন্দ্র
২ =চোখ থেকে সুর্য়
৩ = কর্ন থেকে বায়ু ও প্রান
৪ =মুখ থেকে অগ্নি
৫ = নাবি থেকে আন্তরিখ্য
৬ =মস্তক থেকে স্বর্গ
৭ = পদদ্বয় থেকে ভুমি
শ্রোএ থেকে দিক সকল সৃষ্টি !!
দেহতত্ব লিঈ ৩ প্রকার যথা !
১ পুং লিঙ্গ ২ স্ত্রী লিঙ্গ
৩ নপুংশ. বা ব্রহ্ম লিঙ্গ শেষের টাই
প্রেমের লিঙ্গ এটাই সাধুরা বেশি ব্যাবহার করে!
দেহতত্ব মহলের বিবরন:-
১।রং মহল = মুখমন্ডল
২।স্বর্ণ মহল =বুক
৩।আয়না মহল =চোখ
৪।মনি মহল = মনি মগজ! !
দেহতত্ব জিকির চার প্রকার যথা!
১।লেছানি - মুখের
২।পাছ আনফাছ - দমের
৩।আয়নি - চোখের
৪। ক্বলবি - ক্বলবের দেহতত্ব
১।বোরাখ =নারী লোক
২।রফরফ = দমের বাহন
৩।হাজারে আসওয়াদ = স্ত্রী লিঙ্গ
৪।সাদরাতুল মুনতাহা = কপাল দেশ
৫।বাইতুল মামুর =পুনার্ঈমানবদেহ
৬।জাহান্নাম = পেট থেকে নিম্ন দেশ
১। আরশ - মন
২।কুরসি - দেহ
৩।লওহে মাহফুজ স্মৃতি ফলক
৪। আসমান - মাথা
৫।জমিন - শরীর
৬।পাহাড়-বুক
দেহতত্ব লোকের নাম হলোঃ-
১।দ্যুলোক -মাথা
২।ভূলোক -দেহ জগত
৩।অন্তরিখলোক -হৃদয় বা ব্যুম
দেহতত্ব সিদ্ধর ৪ টি চাবি-
১।দমেহরদম
২।নেগা বারকদম
৩।হুশদরধম
৪। সফর করদম
তেহতত্ব পাকপান্জাতনঃ-
১।গোসা - মা ফাতেমা
২।সাদা পর্দা -হযরত আলী
৩।পানি - ইমাম হাসান ও হোসেন
৪।কুসুম - নুর নবী
৫।মনি কুসুম - আপে আল্লাহ এগুলা
মাতৃ গভের্র রুপক রুপ !
দেহতত্ব দেহের চার ইমামঃ-
১।জিহবা - জিব্রাইল
২।নাক -ইস্রাফিল
৩।কান ও চোখ- মিকাইল
৪।মনি-মগজ - আজরাইল।।

বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২২

আল্লাহ নিরাকার নয়!আকার আছে-দলিল

আল্লাহর আকার আদমের  এবং মানুষের আকারে আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান,
কোরআন হাদিস দিয়ে দলিল দিলাম।
========

আল্লাহকে যে পাপিষ্ঠ নিরাকার বলবে নিঃশ্চয় সে মিথ্যাবাদী মোনাফেক কাফের এবং সেই জাহান্নামী কারণ নিরাকার মানেই কিছুই নেই সরাসরি আল্লাহকে অস্বীকার করা তাই সাবধান সাবধান সাবধান আল্লাহ নিরাকার নয় আল্লাহর আকার আছে।

আল্লাহর আকৃতি রয়েছে, যেমন সূরা সাদের ৭৫ নং আয়াত - এবং ৩৬ নং আয়াতে - সুরা ইয়াসিনের ৭১ নং আয়াতে উল্লেখ রয়েছে, আল্লাহর হাত রয়েছে - সূরা কালামের ৪২ নং আয়াতে উল্লেখ রয়েছে - আল্লাহর পা রয়েছে। সূরা কলমে ৪২ নং আয়াতে" সাক্কি" শব্দ রয়েছে, যার অর্থ পা/ পায়ের পাতা / পায়ের গোছা। সূরা কাসাস এর ৮৮ নং আয়াতে উল্লেখ রয়েছে, আল্লাহর চেহারা ধ্বংস হবে না।

সূরা কাসাস ২৮ নং আয়াতে ওয়াজহাহু শব্দ রয়েছে। ওয়াজহা" শব্দের অর্থ চেহারা, মুখ মন্ডল এবং" হু" শব্দের অর্থ তাঁর। অর্থাৎ" ওয়াজহাহু" শব্দের অর্থ" তাঁর চেহারা" বুঝতে হবে। আর তাঁর চেহারা বলতে যে আল্লাহর চেহারা বুঝতে হবে তার প্রমান সুরা বাকারার ১১৫ নং আয়াতের" ওয়াজহুল্লাহি" শব্দটি।  ওয়াজহুল্লাহি" শব্দের অর্থ আল্লাহর চেহারা। আবার  সুরা লাইলের ২০ নং আয়াতে" ওয়াজহিরাব্বাহি" শব্দ রয়েছে, যার অর্থ" তার রবের চেহারা। এখানে চেহারা বলতে মুখমন্ডল কে বুঝায়। আর মুখমন্ডল বলতে কপাল, চোখ, নাক, মুখ, গাল, মাথা, গলা, কান, তথা একটা কাঠামোকেই বুঝায়। 

আবার বলা হয়েছে, আল্লাহ শুনেন সূরা আল বাকারার ১৩৭ নং এবং ১২৭ নং আয়াত, সূরা নিসা আয়াত নং ৫৮ -  সূরা নিসা আয়াত নং ১৪৮ - সূরা আন নূর আয়াত নং ৬০ - সূরা আসসূরা আয়াত নং ২২০ - সূরা হামিম আয়াত নং ৩৬ - সূরা আন নূর আয়াত নং ২১ এবং ২১৩ - সূরা বনী ইসরাইল আয়াত নং ১ - সূরা আল আম আয়াত নং ১১৫ - তার মানে আল্লাহর কান রয়েছে প্রমানিত হয়।

তিনি দেখেন সূরা হামিম আয়াত নং ৪০ - সূরা বনী ইসরাইল আয়াত নং ১ - তার মানে তাঁর চোখ রয়েছে প্রমানিত হয়। তিনি বলেন সূরা আল মুমিন আয়াত নং ৬০ - তার মানে মুখ, চেহারা রয়েছে প্রমানিত হয়। তিনি জানেন সূরা আল বাকারা আয়াত নং ১৩৭ এবং ১২৭/ ২২৭ - সূরা নিসা আয়াত নং ২২৭ - সূরা আল ইনসিকাক আয়াত নং ২২ -  সূরা হামিম আয়াত নং  ৩৬-  সূরা আন নূর আয়াত নং ২১ - সূরা আসসূরা আয়াত নং ২২০ - সূরা বনী ইসরাইল আয়াত নং ২৫ - সূরা নিসা আয়াত নং ১৪৮ - সূরা আল আহজাব আয়াত নং ৫১ - সূরা আন নূর আয়াত নং ৬০ - তার মানে আল্লাহর জ্ঞান রয়েছে প্রমানিত হয়। আর জ্ঞান রয়েছে মানে স্মৃতিভান্ডার রয়েছে প্রমানিত হয়। 

অনেকে বলেন আল্লাহর চেহারা, হাত, পা, চোখ, কান, বাস্তব নয়, কুদরতি চেহারা, অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কিন্তু না, তাদের বুঝার জ্ঞান আল্লাহ দেননি তারা অন্ধ বধির, কাদামাটি দিয়ে মানুষ তৈরি করেছেন সূরা সোয়াদ আয়াত নং ৭১ - আর কাদামাটি দিয়ে অবয়ব তৈরি করতে হাতের দরকার, বিধায় আল্লাহর হাত, পা, চেহারা বাস্তব সকল কিছু রয়েছে। কারণ মানুষ ব্যতীত অন্যান্য সৃষ্টি কুনফায়া কুন শব্দে সৃষ্টি করেছেন সূরা নাহর আয়াত নং ৪০ - সূরা আল বাকারা আয়াত নং ১১৭ - সূরা আল ইমরান আয়াত নং ৪৭ এবং ৫৯ - সূরা মারইয়াম আয়াত নং ৩৫ - সূরা আল আনাম আয়াত নং ৭৩ - ইয়াসিন আয়াত নং ৮২ - কিন্তু আদম আঃ কে কুনফায়া কুন শব্দে সৃষ্টি করা হয়নি।

তাছাড়া আল্লাহ তাঁর রুহ আদম আঃ এর মধ্যে ফুৎকার করে দিয়ে সূরা সোয়াদ আয়াত নং ৭২ - তাঁর মধ্যে থাকার সূরা ক্বাফ আয়াত নং ১৬ - সূরা আন ফাল আয়াত নং ২৪ - সূরা আল বাকারা আয়াত নং ১৮৬ - জন্য যে দেহটি সৃষ্টি করেছেন সেই দেহ অবয়বটি তাঁর মতই হবে অন্য কোন জীবের মতো হবে না। মানুষ মানুষের আকারই আল্লাহর আকার এটাই স্বাভাবিক।
 
আল্লাহ জাহের বা প্রকাশ্য আল হাদিদ আয়াত নং ৩ - প্রকাশ্য হতে গেলে আকারের ব্যাপার এসে যায়। নবী মুহাম্মাদ সাঃ আল্লাহ কে দেখেছেন সূরা আন নাজম  ৪-১৬ - সূরা আত তাকবীর আয়াত নং ২৩ - সূরা আর রাজ আয়াত নং ২ - 

মুসা আঃ আল্লাহ কে দেখেছেন সূরা নিসা আয়াত নং ১৬৪ - সূরা আস সাজদাহ আয়াত নং ২৩ - সূরা ত্বা হাঁ আয়াত নং ১২ - অনেক নবী রাসুল আল্লাহর সাক্ষাৎ করেছেন সূরা আল বাকারা আয়াত নং ২৫৩ - আল্লাহ তিনটি উপায়ে বান্দার সঙ্গে দেখাদেন, কথা বলেন সূরা আসসূরা আয়াত নং ৫১ - বিধায় এতে প্রমানিত হয় আল্লাহর আকার রয়েছে।
 
আবার সূরা সিজদার ৪ নং আয়াতে উল্লেখ রয়েছে, ৬ দিনে পৃথিবী তৈরি করে আল্লাহ আরশে আজিমে সমাসিন হলেন। যেখানে দাঁড়ানো এবং বসা উল্লেখ থাকে সেক্ষেত্রে অবশ্যই আল্লাহর একটি আকৃতি রয়েছে বলে প্রমান হয়। আর আল্লাহর সেই আকৃতিটাই হচ্ছে অতি উত্তম আকৃতি। আল্লাহ বলেন, আদমকে অতি উত্তম আকৃতিতেই তৈরি করা হয়েছে সূরা- তীন আয়াত নং ৪ - এবং সূরা মুমিন আয়াত নং ৬৪ - এবং সূরা রুমের ৩০ নং আয়াতে উল্লেখ রয়েছে, আল্লাহর প্রকৃতি অনুসারেই মানুষ তৈরি।
 
সূরা-ইনফিতর এর ৮ নং আয়াতে উল্লেখ রয়েছে, আল্লাহ বলেন, 'আমি যেমন ইচ্ছা আকৃতিতে মানুষ তৈরি করেছি, এইজন্য যে, যেন ইচ্ছামত ঐরূপে আহরণ করতে পারি।' এখানে উল্লেখ্য যে, এই আয়াতে 'আইয়ু' সূরত শব্দ এসেছে। আইয়ু শব্দের আপেক্ষিক অর্থ হচ্ছে যেমন (আরবি অভিধান পৃ. ৬৩৮) আইয়ু শব্দের সাথে যে শব্দ ব্যবহৃত হবে সেই শব্দের অর্থের সাথে আইয়ু শব্দের অর্থ নির্ভর করে, যেমন তুমি আমাকে যেমনটা ধাক্কা দিলে আমিও তোমাকে তেমনটা ধাক্কা দিলাম। এই আয়াতে আইয়ু সূরত শব্দ এসেছে বিধায় আল্লাহর যেমন সূরত, তেমন সূরতেই আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। এই আয়াতে 'রাক্কাবাকা' শব্দ এসেছে, 'রাক্কাবাকা' শব্দের অর্থ হচ্ছে আহরণ করা (আরবি অভিধান, পৃ. ১৩৭৪)। যেন ইচ্ছামত আল্লাহ মানব রূপে আহরণ করতে পারে। উপরিউক্ত আলোচনায় বুঝা যায় যে, আল্লাহ পাকের নিজ আকৃতি ও প্রকৃতি অনুসারে মানুষ তৈরি করেছে। 

মহান আল্লাহ তায়ালার আকার বা
আকৃতি আছে নাকি তিনি নিরাকার?
অনেকেই আক্বীদাহ (বিশ্বাস) পোষণ
করে যে, মহান আল্লাহ তায়ালার কোন
আকার বা আকৃতি নেই তিনি
নিরাকার অথচ তাদের এই বিশ্বাস
সঠিক নয় বরং এ ধরনের বিশ্বাস হল
কুরআন ও হাদিসের বক্তব্যের সাথে
সাংঘর্ষিক। কারণ, পবিত্র কুরআন ও
সহীহ হাদিসের কোথাও বলা নেই যে, আল্লাহ তয়ালা নিরাকার তাঁর কোন
আকার নেই। কিন্তু অন্যদিকে, পবিত্র
কুরআন ও সহীহ হাদিস বলছে যে,
আল্লাহর আকার আছে তিনি
নিরাকার নন। মুসলিমরা জান্নাতে
আল্লাহর চেহারা দর্শন করবে।
এই ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা ১৫০০
বছর পূর্বেই সবকিছু পরিস্কার ভাবে
পবিত্র কুরআনে বলে দিয়েছেন।
কেউ যদি বলে, আল্লাহ তায়ালার
হাত, পা, চোখ, চেহারা নেই তাহলে
কুফরী হবে।

এমনিভাবে কেউ যদি বলে আল্লাহ তায়ালার কুদরতী হাত, পা, চোখ, চেহারা আছে অর্থাৎ মৌলিক হাত, পা, চোখ, চেহারা নেই তাহলেও শিরক হবে। কুদরত হল বিশেষ্য, তার বিশেষণ অবশ্যই থাকতে হবে। কারণ, কোন বিশেষ্য ছাড়া বিশেষণ হয় না।
তাই কুদরতী হাত, পা, চোখ, চেহারা হলে মৌলিক হাত, পা, চোখ, চেহারাও থাকতে হবে। অতএব আল্লাহ তায়ালার মৌলিক
হাত, পা, চোখ, চেহারাও রয়েছে।

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ(কিয়ামতের দিন) ভূপৃষ্ঠের সবকিছুই ধবংস হয়ে যাবে (হে রসূল!) আপনার মহিমাময় ও মহানুভব রবের সত্তা অর্থাৎ চেহারাই একমাত্র বাকী
থাকবে।" [সূরা আর-রহমান আয়াত নাম্বার:--২৭],
আল্লাহর সত্তা বা চেহারা ব্যতীত সব কিছু ধ্বংস হবে। [সূরা আল-কাসাস আয়াত নাম্বার:- ৮৮], পূর্ব ও পশ্চিম এর মালিক আল্লাহ, তোমরা যে দিকেই তোমাদের মুখমণ্ডল ফিরাবে সেদিকেই আল্লাহর চেহারা থাকবে। [সূরা আল-বাকারাহ আয়াত নাম্বার:- ১১৫],
(কিয়ামতের দিন) কোন কোন মুখমন্ডল
উজ্জল হবে, তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে থাকবে। সূরা ক্বিয়ামাহ আয়াত নাম্বার:- ২২-২৩]।
জাবির বিন আবদিল্লাহ হতে বর্ণিত।
তিনি বলেন, যখন এ আয়াত নাযিল
হলঃ "বল, সেই আল্লাহ ক্ষমতা রাখেন
তোমাদের উপর আযাব নাযিল করার
তোমাদের ঊর্ধ্ব দিক হতে" রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, 'আমি তোমার চেহারার আশ্রয় চাই।' অথবা তোমাদের পায়ের নীচের দিক হতে" রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, 'আমি তোমার চেহারার আশ্রয় চাই।
[বুখারী ২য় খণ্ড ৬৬৬ পৃষ্ঠা, ইবনু কাসীর
২য় খণ্ড ১৮৯ পৃষ্ঠা],

রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহর চেহারা
নূরে পরিপূর্ণ।" [মুসলিম হাঃ ১৭৯],
রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জান্নাতবাসীগন তাকে তেমনিই দেখতে পাবেন, যেমন পূর্ণিমার রাত্রে মেঘশূন্য আকাশে চন্দ্র প্রত্যক্ষ করা যায়।
[বুখারী হাঃ ৫৫৪, মুসলিম হাঃ ৬৩৩।]

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ "আমি
আমার নিকট হতে তোমার উপর ভালবাসা ঢেলে দিয়েছিলাম, যাতে তুমি আমার চোখের সামনে পতিপালিত হও।
[সূরা ত্বাহা আয়াত নাম্বার:- ৩৯],

হে রসূল! আপনি আপনার রবের নির্দেশের অপেক্ষায় ধৈর্যধারণ করুন,আপনি আমার চোখের সামনেই রয়েছেন।
[সূরা আত-তূর আয়াত নাম্বার:- ৪৮],

নিশ্চয়ই আল্লাহ শ্রবণ করেন ও দেখন।
[সূরা আল-মুজাদালাহ আয়াত নাম্বার:-
০১]
আর আপনি আমার সম্মুখে আমারই
নির্দেশ মোতাবেক একটি নৌকা তৈরী করুন এবং পাপিষ্ঠদের ব্যাপারে আমাকে কোন কথা বলবেন না। অবশ্যই তারা ডুবে মরবে। [সূরা হুদ আয়াত নাম্বার:- ৩৭],

কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব
শুনেন, সব দেখেন। [সূরা আশ-শুরা আয়াত নাম্বার:- ১১]

আল্লাহকে দুনিয়ার কোন চোখ দেখতে
পারে না বরং তিনিই সমস্ত চোখকে দেখতে পারেন। তিনি অতিশয় সূক্ষ্মদর্শী এবং সর্ব বিষয়ে জ্ঞানী। [সূরা আল-আনআম আয়াত নাম্বার:-১০৩]।
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত।
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
তোমাদের প্রভু অন্ধ নন।
[বুখারী ২য় খণ্ড ১০৫৫-১০৫৬ পৃষ্ঠা,
মুসলিম।]

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ " আর
ইহুদীরা বলেঃ আল্লাহর হাত বন্ধ হয়ে
গেছে। তাদেরই হাত বন্ধ হোক। একথা
বলার জন্যে তাদের প্রতি অভিসম্পাত।
বরং তাঁর উভয় হস্ত উম্মুক্ত। তিনি যেরূপ
ইচ্ছা ব্যয় করেন। আপনার প্রতি পলন কর্তার পক্ষ থেকে যে কালাম অবর্তীণ হয়েছে, তার কারণে তাদের অনেকের অবাধ্যতা ও কুফর পরিবর্ধিত হবে। আমি তাদের পরস্পরের মধ্যে কেয়ামত পর্যন্ত শত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিয়েছি। তারা যখনই যুদ্ধের আগুন প্রজ্জিত করে, আল্লাহ তা নির্বাপিত করে দেন। তারা দেশে
অশান্তি উৎপাদন করে বেড়ায়। আল্লাহ অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদেরকে পছন্দ করেন না।
[সূরা আল-মায়িদাহ আয়াত নাম্বার:-৬৪],

হে ইবলীস! আমি নিজ হাতে যাকে সৃষ্টি করেছি, তার সামনে সিজদাহ করতে তোমাকে কিসে বাঁধা দিলো?
[সূরা স্বদ আয়াত নাম্বার:- ৭৫]

(এখানে হাত অর্থ হাতই, এর অর্থ শক্তি
বা কুদরত নয়।) বরকতময় ঐ সত্তা যাঁর হাতে রাজত্ব তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান। [সূরা আল-মূলক আয়াত নাম্বার:- ১],

আল্লাহর দুই হাত তো উদার ও উন্মুক্ত।
তিনি যেভাবে ইচ্ছা খরচ করেন। [সূরা আল-মায়িদা আয়াত নাম্বার:-৬৪],

তারা আল্লাহকে যথার্থরুপে বুঝেনি।
কিয়ামতের দিন পুরো পৃথিবী তাঁর হাতের মুঠোতে এবং আসমানসমূহ ভাজ করা অবস্থায় থাকবে তাঁর ডান হাতে। তিনি পবিত্র। আর তারা যা শারীক করে তা থেকে তিনি অনেক উর্ধ্বে।"
[সূরা আয-যুমার আয়াত নাম্বার:- ৬৭]।

আবদুল্লাহ বিন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,পাদ্রীদের একজন পাদ্রী রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম 
এর নিকট এসে বলল, হে মুহাম্মাদ!
আমরা চাই যে, আল্লাহ (কিয়ামত দিবসে) আসমানসমূহ এক আঙ্গুলের উপর, যমীন সমূহ এক আঙ্গুলের উপর, গাছসমূহ এক
আঙ্গুলের উপর, পানি-কাদা এক আঙ্গুলের উপর এবং সমস্ত সৃষ্টি এক আঙ্গুলের উপর করে বলবেন, আমি বাদশাহ। একথা শুনে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাদ্রীর কথাকে সত্যায়িত জন্য হেঁসে দিলেন। এমনকি তাঁর নাওয়াজেয দাঁত প্রকাশ পেল। অতঃপর রসূল সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম (এ আয়াত) পাঠ
করলেন- "তারা আল্লাহকে যথার্থরূপে
বুঝেনি। কিয়ামতের দিন সমগ্র পৃথিবী
তাঁর হাতের মুঠোতে থাকবে।"
[বুখারী ২য় খ খণ্ড ৭১১ পৃষ্ঠা, মুসলিম ২য়
খণ্ড ৩৭০ পৃষ্ঠা, ইবনু কাসীর ৪র্থ খণ্ড ৮০
পৃষ্ঠা],

রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "আল্লাহ নিজ হাতে তাওরাত লিখেছেন। [বুখারী হাঃ ৬৬১৪, মুসলিম 
হাঃ ২৬৫২],

রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "আল্লাহর উভয় হাতই ডান।
[মুসলিম হাঃ ১৮২৭],

রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "আল্লাহর
আংগুলের কথাও মুমিন বিশ্বাস করে।
[বুখারী হাঃ ৭৫১৩, মুসলিম হাঃ ২৭৮৬।]।

মহান আল্লাহ তায়ালার পাঃ মহান আল্লাহ তায়ালার যেরূপ পারয়েছে তদরূপ তাঁর পায়ের পিণ্ডুলীও রয়েছে, মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ যেদিন পায়ের গোছা বা পিণ্ডলী প্রকাশ করা হবে, সেদিন তাদেরকে
সিজদাহ করতে আহবান করা হবে, অতঃ পর তারা সিজদাহ করতে সক্ষম
হবে না। [সূরা আল-ক্বালাম আয়াত নাম্বার:-
৪২]

আনাস বিন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
"জাহান্নামের মধ্যে পাপীদের নিক্ষেপ করা হবে আর জাহান্নাম বলবে আরও এর থেকে বেশী আছে কি? তিনি তার পা জাহান্নামের মধ্যে রাখবেন। অতঃপর জাহান্নাম বলবে
যথেষ্ট হয়েছে, যথেষ্ট হয়েছে। অপর
বর্ণনায় আছে জাহান্নাম বলবে আরও
অতিরিক্ত আছে কি? অতঃপর বরকতময়
মহান রব্ব আল্লাহ তাঁর পা জাহান্নামের উপর রাখবেন। অতঃপর জাহান্নাম বলবে যথেষ্ট হয়েছে, যথেষ্ট হয়েছে।" [বুখারী ২য় খণ্ড ৭১৯ পৃষ্ঠা, ইবনু কাসীর
৪র্থ খণ্ড ২৮৯-২৯০ পৃষ্ঠা],

আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আমাদের প্রভূ তাঁর পায়ের গোছা বা পিণ্ডলী প্রকাশ করবেন। অতঃপর তাঁর জন্য সকল মুমিন, মুমিনাহ সিজদাহ করবে এবং বাকী
থাকবে ঐ সমস্ত লোক যারা দুনিয়াতে
লোক দেখানো সাজদাহ করতো। তারা
সিজদাহ করতে যাবে অতঃপর তাদের
পিঠ এক তাবকা বা বরাবর হয়ে যাবে।"
[বুখারী ২য় খণ্ড ৭৩১ পৃষ্ঠা, ইবনু কাসীর
৪র্থ খণ্ড ৫২৪ পৃষ্ঠা]।

রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, বান্দা তাওবাহ করলে খাদ্য-পানীয় বোঝাই করা উট মরু সফরে হারিয়ে গিয়ে ফিরে পাওয়ার পর মুসাফির যত খুশি হতে পারে তার থেকেও বেশি খুশি হন তিনি। [বুখারী, মুসলিম হাঃ ৫০৩০।],

(আল্লাহর খুশি কোন সৃষ্টির খুশির মত
নয়।) উল্লিখিত আয়াতসমূহ ও হাদিসসমূহ
দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, মহান আল্লাহ তায়ালার চেহারা, হাত, চোখ, পা আছে; তিনি অবয়বহীন নন; বরং তাঁর অবয়ব রয়েছে যদিও আমরা সেটার ধরণ বা রূপ সম্পর্কে কোনো কিছুই জানি না। তবে আমাদেরকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে, মহান আল্লাহ তায়ালার শ্রবণ-দর্শন ইত্যাদি মানুষের শ্রবণ-দর্শনের অনুরূপ নয়।
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ কোন কিছুই তাঁর সাদৃশ্য নেই অর্থাৎ কোন কিছুই তাঁর (আল্লাহর) অনুরূপ নয়। তিনি সবকিছুই শুনেন এবং দেখেন। [সূরা আশ-শুরা আয়াত নাম্বার:- ১১]।

রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, পার্থিব জগতে মানব-দানবের জন্য আল্লাহ পাক অদৃশ্য। [মুসলিম হাঃ ১৬৯, ১৭৭]।

ইহকালে অর্থাৎ দুনিয়ার জীবনে আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের কাছে অদৃশ্য থেকেই গায়েবী ঈমান আনার নির্দেশ দিয়েছেন। অদৃশ্যভাবেই তাকে জানা ও চেনার এবং তাঁর একত্ববাদ ও প্রভুেত্ব বিশ্বাস স্থাপন
করার আদেশ দিয়েছেন। যদি তিনি
বান্দাদের দৃশ্যমান হতেন, তাহলে নবী-
রসূল, কিতাব, কারোর উপদেশ ও নসীহত
ছাড়াই সারা জগতবাসী মুমিন হয়ে
যেত। তাঁর কোন আদেশ কেউ অমান্য
করতো না। কিন্তু মহাপরীক্ষার জন্যই
তিনি অদৃশ্য আছেন। তবে পরকালে
অর্থাৎ মৃত্যুর পরবর্তী জীবনে আল্লাহ
তায়ালা জান্নাতবাসীদেরকে দর্শন
দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ(কিয়ামতের দিন) কোন কোন মুখমন্ডল উজ্জল হবে, তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে দৃষ্টি দিয়ে
তাকিয়ে থাকবে।" [সূরা ক্বিয়ামাহ আয়াত নাম্বার:- ২২-২৩]।

রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জান্নাতবাসীগন তাকে তেমনিই দেখতে পাবেন, যেমন পূর্ণিমার রাত্রে মেঘশূন্য আকাশে চন্দ্র প্রত্যক্ষ করা যায়।"
[বুখারী হাঃ ৫৫৪, মুসলিম হাঃ ৬৩৩।]

(তবে সে দেখার কোন উপমা বা দৃষ্টান্ত নেই।) আল্লাহ তায়ালার আকার বা আকৃতি
সম্পর্কে ইমাম আবূ হানিফা রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ আল্লাহ তায়ালার মুখমণ্ডল ও দেহ আছে যেমন মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র
কুরআনে বর্ণনা করেছেন। পবিত্র কুরআনের বর্ণনায় আল্লাহ তায়ালার যে চেহারা, হাত, দেহের যে বর্ণনা দেয়া হয়েছে তা আল্লাহ তায়ালার দৈহিক বৈশিষ্ট। আমরা তাঁর ঐ সকল অঙ্গের বিষদ বিবরণ অবগত নই। কেউ যেন আল্লাহ তায়ালার হাতকে কুদরতী হাত বা তাঁর নেয়ামত না বলে। কেননা তাতে তার সিফাত বা গুনাবলীকে
অস্বীকার করা হয়। আর যারা কুদরতী
হাত বলে তারা কাদরিয়াহ ও মুআযিলাহ সম্প্রদায়ের লোক। (ইমাম আবূ হানীফার ফিকহুল আকবার মোল্লাহ আলী কারী হানাফীর শরাহসহ দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ বৈরুত ৫৮-৫৮ পৃষ্ঠা)।

সুতরাং মহান আল্লাহ তায়ালার আকারগত বৈশিষ্ট্যসহ যাবতীয় গুণাবলীর ক্ষেত্রে আমাদেরকে এই চারটি বিষয় মনে রাখতে হবেঃ ১। এগুলো অস্বীকার করা যাবে না,
২। অপব্যাখ্যা করা যাবে না, ৩। সৃষ্টির সাথে সাদৃশ্য করা যাবে না এবং ৪। কল্পনায় ধরণ, গঠন আঁকা যাবে না। পবিত্র কোরআন থেকে সূরা এবং আয়াত নং সহ উপস্থাপন করার পরে কোন বেদিন পথভ্রষ্ট জাহান্নামিরা বলবে আল্লাহর আকার নাই।
আল্লাহ আদম সুরত এবং মানুষের আকারে এটাই স্বাভাবিক এবং সত্য।