সালাতের হাকিকত:
আমাদের সমাজে আমরা সালাতকে নামায বলে থাকি।'সালাত' আরবি ভাষা; নামাজ ফার্সী ভাষা।যা কালের বিবর্তনে আমরা পেয়েছি।
পাক ভারত উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারিত রয়েছে তা মূলত পীর ফকিরগণের দ্বারা।মধ্যপ্রা
আমাদের দেশের কোন কোন ধর্মবিজ্ঞানীর ধারনা যে,নামাজ শব্দটি 'নমঃ' ধাতু হতে উতপত্তি।এ থেকে বাংলা ভাষায় দুটি শব্দ পাওয়া যায় একটি 'নমস্কার' অর্থ 'সালাম' আর অন্যটা 'নামাজ'।মূল ধাতু নমঃ থেকে উদ্ভব বলে নমস্কার ও নামাজ একই অর্থ বহন করে।
সালাত হচ্ছে,"আল্লাহ্ ও তার রাসূলের সঙ্গে সংযোগ প্রচেষ্টা"।
সকল কর্ম ও চিন্তাকে ভেঙে ভেঙে তার স্বরূপ জ্ঞান দ্বারা বিস্তারিতভাবে দেখার নাম সালাত।
ইমাম জাফর সাদেক (আঃ) সালাতের সংজ্ঞা দেন:
"সম্যক কর্ম সম্যক সময়ে যথাবিহিত সম্পাদনের নাম সালাত"।
কর্মকে যতই ক্ষুদ্রায়িতভাবে
হাদিসে উল্লেখ আছে,"আসসালাতু মেরাজুল মুমেনিন" অর্থঃ সালাত মুমিনের মেরাজ।মেরাজ মানে আল্লাহর সাথে দিদার লাভ করা।
আল কোরআনে উল্লেখ আছে ,"ইন্নাস সালাতা তানহার আনিল ফাহশায়ি ওয়াল মুনকার" অর্থঃ নিশ্চয়ই সালাত যাবতীয় খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।
কিন্তু বর্তমানে আমরা যে সালাত আদায় করি তা শুধু মাত্র দেহের একটা অঙ্গিভঙ্গি ও আনুষ্ঠানিকতা।পব
আল্লাহ্ পাক বলেন,"আন তাক্কুম লিল্লাহি মাছনা..অ ফুরা..দা ছুম্মা তাতাফাক্কারু"(৩
এখানে 'মাছনা' মানে জোড়া জোড়া।যা তাফসিরকারকগণ জামাত হিসেবে প্রকাশ করেছেন।
প্রকৃত পক্ষে কোরআনের শিক্ষা হলো একজন সম্যক গুরু বা কামেল মুর্শিদ নিজ আত্মসমর্পণকারীক
পাক কোরআনে যে সালাতের কথা বলা হয়েছে তা হলো দায়েমী সালাত।কোরআনে উল্লেখ আছে,"ওয়াল্লাজিন
সালাত মূলত ২ ধরনের।
১.জাহেরী নামাজ
২.হাকিকি নামাজ
নামাজে হাকিকি সম্পর্কে রাসূল (সা.) বলেছেন,"লা সালাতা ইল্লা বিহুজুরিল ক্বালব" অর্থঃ হুজুরি দিল ব্যতিত নামাজ সঠিক হয় না।
জাহেরী নামাজ হলো দৈহিক অঙ্গিভঙ্গি মাত্র।আর হাকিকি নামাজ আল্লাহ্ প্রাপ্তি ঘটায়।হাকিকি বা দায়েমী সালাত আমিত্বের বিরূদ্ধে যুদ্ধ,চঞ্চল মনকে স্থির করে একটি কেন্দ্রবিন্দুতে
সূরা আলা'র ১৪ ও ১৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে,"ক্বাদ আফলাহা মান তাজাক্কা অজাকারাস মা রাব্বিহি ফাসাল্লা"অর্থঃ নিশ্চয়ই সে ব্যক্তি কল্যানপ্রাপ্ত হয়েছে যে নিজেকে পবিত্র করেছে এবং তার রবের স্মরণ ও সংযোগ প্রতিষ্ঠা করে সফলকাম হয়েছে।অতএব,সে করল সালাত।তাই সালাত আদায়ের মূল উদ্দেশ্য হলো মহান প্রভুর সাথে সংযোগ স্থাপন করা।আর সংযোগের ব্যাপারটি হলো মন ও ভাবের ব্যাপার।যে রাসূলের সাথে সংযোগ স্থাপন ককল তার স্বয়ং প্রভুর সাথে সংযোগ স্থাপন হলো।আর দয়াল রাসূলের সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্যই গুরু বা মুর্শিদের শরণাপন্ন হতে হবে।যার নিকট আত্মসমর্পণ করলে দায়েমী সালাতের মাধ্যমে শুদ্ধ হয়ে স্বয়ং স্রষ্টার সাথে সৃষ্টি বিলীন হয়ে যেতে পারে।
আমাদের সকলকে মহান প্রভু কামেল গুরুর নেক নজর ভিক্ষা দিন।কেননা,"অলি আল্লাহর সাথে একদিনের সহোবত হাজার বছর ইবাদাতের চাইতে উত্তম"=>মাওলানা
মহান আল্লাহ্ আমাদের সকলের ধর্মরাশির ভাসমান মূর্তিগুলোকে ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে তার নির্দেশনা অনুযায়ী সালাত আদায় করার দয়াটুকুন ভিক্ষা দিন।আমিন।
লেখা: হিমার্দ্রী
পোষ্ট : নুরে আলম
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন