শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২২

লুৎফার লেখা

চাইলে ই সব কিছু পাওয়া যায় না,
সময়ের কাছে হেরে যায় - হৃদয়ের লেনদেন!!
সময়ের উত্তাল স্রোতে - ভেসে যায় স্বপ্নের বালিঘর,
ব্যার্থতার গ্লানি টুকু থাকে আজীবন!!
কিছু ব্যাথা, কিছু অশ্রু তাই আজ থাক না গোপন,
অনবদ্য ইচ্ছাগুলোর না হোক মরণ!!
হিয়ায় হিয়ায় মিশে থাক - কায়া যত হোক দূরে,
অসমাপ্ত গল্পের হাহাকারের হৃদয় যাক না পুড়ে!!
কিছু আকাঙ্ক্ষার না হলো মিলন,
অপেক্ষা থাকবে তবু জনম জনম!!

শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২২

মানব দেহের তত্ত্বভেদ

মানব দেহের তত্ত্ব ভেদ 

*মানব দেহের = হাত পায়ের চারটি বৃদ্ধ আঙ্গুল কে চার কুতুব বলা হয়
*মানব দেহের = হাত পায়ের ষোলটি আঙ্গুল কে ষোল প্রহরী বলা হয় ।
*মানব দেহের = দুই হাতে ছয় বুরুজ দুই পায়ে ছয় বুরুজ ইহাকে বার বুরুজ বলা হয় 
*মানব দেহের = ছিনার দুই পাশে সাতটা করে চৌদ্দটা হাড় আছে 
 ইহাকে চৌদ্দ কামান বলা হয় ।

*মানব দেহের = আট কুঠুরি, মস্তকে একটি, কপালে একটি, ঘারে একটি, বহ্মদেশে একটি, ডাইন স্তনের নিচে একটি, নাভীমুলে একটি,মেরুদণ্ডে একটি, মলদ্বার ও মৃত্রদ্বারের মাঝখানে একটি, ইহাকে আট কুঠুরি বলা হয় 

*মানব দেহের = দুইটি কর্ণ দুইটি চহ্মু নাশিকার দুইটি অংশ ও একটি মুখ, ইহাকে সাত সমুদ্র বলা হয় ।

*মানব দেহের = তেরটি নদী, কাম নদী, প্রেম নদী,আশা নদী,মায়া নদী,রুপ নদী, ভাব নদী,ক্রোধ নদী,মোহ নদী,হায়াত নদী,ত্যাগ নদী,কাম নদীতে তিন নদী,একধারে রক্ত একধারে মুত্র, একধারে রজ। 

*মানব দেহের =বায়ান্ন বাজার, মোকাম,ওরাউল ওরায়, বায়ান্ন বাজার অবস্থিত।

*মানব দেহের =তেপ্পান্ন গলি, দাতে ত্রিশটি,মস্তক হইতে লিঙ্গ প্রর্যন্ত বাইশ টি রগ দ্বারা আবৃত করা, এবং লিঙ্গে একটি, ইহাকে তেপ্পান্ন গলি বলা হয়।

*মানব দেহের =ছাপ্পান্নটি মাথা আছে, বত্রিশ দাতের বত্রিশ মাথা, হাত পায়ের কুরি মাথা নাশিকার একটি মাথা,নিজের একটি মাথা,জিহ্বার একটি মাথা,লিঙ্গের একটি মাথা, ইহাকে ছাপ্পান্নটি মাথা বলা হয়

*মানব দেহের =সারে চব্বিশ চন্দ্র, বিশ আঙ্গুলে বিশ চন্দ্র, মস্তকে এক চন্দ্র,নাশিকাতে এক চন্দ্র, জিহ্বাতে এক চন্দ্র, আদি চন্দ্র গোপনে রহিলো ইহা কামেল মুর্শিদের নিকট থেকে জেনে নিবেন

*মানব দেহের =তিনটি চহ্মু, চর্ম চহ্মু,অন্তর চহ্মু, জ্ঞান চহ্মু  
 
হাজী মোঃ ইমান শাহ্ বনপূরী

শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২

হাবিব বাবার নসব নামা

( আমাদের প্রাণপ্রতিম মুর্শিদ কেবলা  হযরত শাহ্ সুফি আলহাজ্ব মাওলানা সৈয়দ হাবিবুল বশর আল হাচানী আল মাইজভান্ডারী পবিত্র নছব নামা 
Hazrat Shahsufi Alhaz Maulana  Sayed Habibul Bashar Al Hasani Al Maizbhandari Holy Nashab Nama)

1. Holy Prophet Hazrat Ahmed Mujtaba Muhammad Mustafa Sallallahu Alayhi Wasallam

2. Hazrat Syeda Fatima Binte Rasul & Hazrat Shere-e-Khoda Mawla Ali (RA)

3. Hazrat Imam Hasan Ibne Ali (RA)

4. Hazrat Syed Hasanul Musanna Al-Hasani (RA)

5. Hazrat Syed Abullah Mahz Al-Hasani (RA.)

6. Hazrat Syed Musa Al-Zoon Al-Hasani (RA.)

7. Hazrat Syed Abdullah Sani Al-Hasani (RA.)

8. Hazrat Syed Muas Al-Sani Al-Hasani (RA.)

9. Hazrat Syed Abu Bakar Dawd Al-Hasani (RA.)

10. Hazrat Syed Samsuddin Zakaria Al-Morech Al-Hasani (RA.)

11. Hazrat Syed Yahia Zahed Al-Hasani (RA.)

12. Hazrat Syed Abu Abdullah (Abdullah) Al-Jili Al-Hasani (RA.)

13. Hazrat Syed Abu Saleh Musa Jangi Dost Al-Hasani (RA.) 

14. Hazrat Syed Gausal Azam, Qutb-e-Rabbani, Mahbub-e-Sobhani Shaikh Sayed Abu Mohammad Mohiuddin Abdul Qader Jilani Al-Hasani Wal-Hussainy (Q)

15. Hazrat Syed Abdur Razzak Al-Hasani Wal-Hussainy (Q)

16. Hazrat Syed Abu Saleh Nashr (NADR) Al-Hasani Wal-Hussainy (Q)

17. Hazrat Syed Jamaluddin Al-Hasani Wal-Hussainy (Q)

18. Hazrat Syed Mohammad Daud Al-Hasani Wal-Hussainy (Q)

19. Hazrat Syed Jalaluddin Al-Hasani Wal-Hussainy (Q)

20. Hazrat Syed Bahauddin Al-Hasani Wal-Hussainy (Q)

21. Hazrat Syed Tajuddin Al-Hasani Wal-Hussainy (Q)

22. Hazrat Syed Hamiduddin Shah Ghori Hindi Al-Hasani Wal Hussainy (Q)

23. Hazrat Syed Abdul Qadir Shah Al-Hasani Wal Hussainy (Q)

24. Hazrat Syed Ataullah Shah Al-Hasani Wal-Hussainy (Q)

25. Hazrat Syed Tayebullah Shah Al-Hasani Wal-Hussainy (Q)

26. Hazrat Syed Motiullah Shah Al-Hasani Wal-Hussainy (Q)

27. Gausul Azam Hazrat Syed Ahmadullah Maizbhandari Al Hasani (Q)

28. Gausul Azam Hazrat Syed Gulamur Rahman Al Hasani Wal Hussainy Baba Bhandari (Q)

29. Hazrat Shahsufi Alhaz Maulana  Syed Shafiul Bashar Al Hasani Wal Hussainy Maizbhandari (Q)

30. Hazrat Shahsufi Alhaz  Maulana Syed Habibul Bashar  Al Hasani Al Maizbhandari (M.J.A.)

31. Hazrat Shahsufi Alhaz Maulana Syed Mahtabul Bashar Al-Hasani Al Maizbhandari.

বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

চরণ কি?

চরণ কি?
======

আজ আমি লালন শাঁইজির গানে ব্যাবহৃত চরণ ও তাঁর দৃষ্টিতে কোরান নিয়ে আলোচনা করবো।কেন না লালন শাঁইজি তার অনেক গানের মধ্যে কয়েক প্রকার চরণের কথা উল্লেখ করেছেন।যেমন-

সাধু চরণ,গুরু চরণ,শ্রী চরণ, রাঙ্গা চরণ, উভয় চরণ ও অভয় চরণ।

চরণ শব্দের অর্থ কি?

আপনারা জানেন চরণ মানে পা।তাই যখন লালনের গান-

১।কবে সাধুর চরণ ধুলি মোর লাগবে গায়।আমি বসে আছি আশা সিন্ধু কুলেতে সদায়।

তখন লালন পন্থিরা বলেন।চরণ মানে পা।আর গুরুর চরণ আশায় শিষ্য আশা সিন্ধু কুলে বসে থাকে।

আবার এই গানের ই শেষ লাইনে লেখা আছে,

আমি শুনেছি সাধুর করুণা,সাধু চরণ পরশিলে হয়গো সোনা। 

তাহলে দেখা গেলো সাধু চরণ স্পর্শ হলে সোনা হয়ে যায়।কিন্তু চরণ মানে পা হলে ,এই পায়ের পরশে কিছুই সোনা হওয়া সম্ভব নয়।গুরুর মুখ নিসৃত বাণীতে হয়তো খারাপ ভালো হয়ে যেতে পারে, কিন্তু চরণ ধুলিতে নয়।

আবার লালন শাঁইজি তার গানের মধ্যে বলেছেন-

২।রাঙ্গা চরণ পাবো বলে,বাঞ্ছা সদায় হৃদ কমলে।
৩।সার করো মন গুরুর চরণ।পারে যাওয়ার থাকলে আশা।
৪।রেখো মোরে শ্রী চরণে,চরণ ছাড়া করো না।
৫।যুগলো চরণের ধুলি লাগবে কবে পাপির গায়।আশা সিন্ধু কুলে বসে আছি গো সদায়।

আবার বলেছেন-ধরো চরণ ছেড়ো না,নিতাই কাওরে ফেলে যাবে না।

তাই এই চরণের মাহাত্ম কি? কি বলতে চেয়েছেন লালন এই চরণকে।আসুন আজ আমরা জেনে নিই চরণ বলতে লালন কাকে বুঝিয়েছেন।এবং চরণের সাধনা কি।

চরণ শব্দের অর্থ পঠিত।অর্থাৎ যাহা পাঠ করা হয় তাহাকেই চরণ বলে।যেমন কোরান অর্থ পঠিত।এই কোরানকেই লালন তার ভাষায় চরণ বলেছেন।অর্থাৎ কোরান মানেও পঠিত, চরণ মানেও পঠিত।এখন কোরানের মধ্যে পাঁচটি কিতাব বর্তমান ঠিক তেমনি লালনও চরণকে পাঁচ ভাগে ভাগ করেছেন।যেমন-

১।শ্রী-চরণ-=যার অর্থ পুরুষ লিঙ্গ।আর শ্রী-চরণের ধুলি হলো শুক্রাণু।
২।রাঙ্গা-চরণ-=যার অর্থ স্ত্রী-লিঙ্গ।আর রাঙ্গা চরণের ধুলি ডিম্বাণু।
৩।সাধু-চরণ-=যার অর্থ নারীর ডান স্তন।সাধু চরণ ধুলি ডান স্তনের দুধ।
৪।গুরু-চরণ-=যার অর্থ নারীর বাম স্তন।আর গুরু চরণ ধুলি বাম স্তনের দুধ।
৫।যুগল-চরণ-=যার অর্থ নারীর ডান ও বাম স্তন।আর যুগল চরণ ধুলি ডান ও বাম স্তনের সম্মিলিত দুধ।এ্কে অভয় চরণ ও বলা হয়েছে।অর্থাৎ যে,গুরুর মুখ নিসৃত বাণীতে সাধু চরণ সাধতে সাধতে যুগল চরণে প্রবেশ করতে পেরেছে।সেই অভয় প্রাপ্ত হয়েছে।


রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ফকির ও মুন্সি কথপোকথন

ফকির ও মুন্সির কথোপকথনঃ——

মুন্সিঃ—শরিয়ত এবং নামাজ-রোজা- হজ্ব-যাকাত-কোরবানি-এগুলো পালন করেন কি-?

ফকিরঃ—আমি কি পালন করি সেটা পরে বলি-আগে দেখি আপনি কি পালন করেন!

আচ্ছা শরিয়ত কোন নবী থেকে প্রচলিত-?

মুন্সিঃ—সোলেমান নবী থেকে!
ফকিরঃ—ভালো কথা-নামাজ কোন নবী থেকে শুরু-?

মুন্সিঃ—আদম (আঃ) থেকেই!
ফকিরঃ—রোজা-?
মুন্সিঃ—মুসা নবী থেকে!
ফকিরঃ—হজ্ব-?
মুন্সিঃ—ইব্রাহীম নবী থেকে!
ফকিরঃ—কুরবানি-?
মুন্সিঃ—ইব্রাহীম নবী থেকে!
ফকিরঃ—আচ্ছা ভালো কথা-আপনি কোন নবীর উম্মত-?
মুন্সিঃ—কেন!
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর!
ফকিরঃ—শরিয়ত সোলেমান (আঃ) থেকে-
নামাজ আদম (আঃ) থেকে-
রোজা মুসা (আঃ) থেকে-
কুরবানি এবং হজ্ব ইব্রাহীম নবী থেকে-
তো আপনি যে দয়াল নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উম্মত দাবি করছেন—
সেই নবীর কি পালন করেন-?

মুন্সিঃ—আজ উঠি আযান পরে গেছে- তাছাড়া দুই জায়গায় দাওয়াত আছে!

———————সংগ্রহীত———————

বুধবার, ২২ জুন, ২০২২

চার মোকামের বিবরণ

চার মোকামের বিবরন :----
১।নাছুত=চোখ
২।মলকুত=কান
৩।জবরুত=জিহবা
৪।লাহুত=লাকসাম
আল্লার পরিচয়ঃ
১।হাওয়ার সাথে সতত বিরাজে
২।আদম সুরাতে দরশন
৩।কুলুবিল মোমেনিনায় বারামখানা
৪।ত্রিবেনীতে জোয়ার ভাটার নিয়ন্ত্রক
মানব দেহের ভেতরে বাইরে সব জাগায় আমি আল্লাহ
ছাড়া আর কিছুই খুজে পাইনি।
নফি এজবাতের কতক ধারাঃ
১।লা ইলাহা/নফি=তন বা দেহ
২।ইল্লাল্লাহ/এজবাত=জান বা জীবন
৩।আনল হক আল্লা= আমি সত্যই আল্লাহ
৪।কালুল্লা=আদম তন বা কায়া
৫।আল্লাহ=দেহের ছায়া
নূরের ভেদ(নূর ৩০-৩৫)
১।তাঁক=সাধুর বক্ষস্থল
২।চেরাগ=গুরু ভক্ত লোকের সুরাত
৩।কাঁচ পাত্র=গুরু ভক্ত লোকের অন্তর
৪।জয়তুন গাছ=গুরু
৫।জয়তুন তেল=আবে হায়াত
৬।নূরের ওপর নূর=ভক্তের ওপর গুরুর আশ্রয়
কোরানের কিছু রহস্যঃ
১।কিতাব=মানব দেহ
২।আয়াত=দেহের কতক অংশের পাঠ
৩।হরফ=দেহের গঠন
৪।নুকতা=শুক্র বা আলাক
৫।হরকত/তাশদীদ/মদ=হাওয়াতে সাকিন
কয়েকটি সাধনের বিষয়ঃ
১।তানজিয়া=আউযুবিল্লাহ হিমিনাশ শয়তানীর রাজীম
২।তাসমিয়া=বিসমিল্লাহ হির রহমানির রহীম
৩।অরুজ=পাক কলেমা/ভাল দিক
৪।নজুল=নাপাক কলেমা/খারাপ দিক
৫।রাজহংস=সাধুত্ব
৬।মোরাকাবা মোশাহেদা=নূর দর্শন
৭।গৌড়াঙ্গ মুরতি=গৌড় বরন
পঞ্চতনের বিবরণঃ
১।লতিফাতন
২।ফানাতন
৩।নূরীতন
৪।বাকাতন
৫।কেসিফতন
নূরের ভেদ(নূর ৩০-৩৫)
১।তাঁক=সাধুর বক্ষস্থল
২।চেরাগ=গুরু ভক্ত লোকের সুরাত
৩।কাঁচ পাত্র=গুরু ভক্ত লোকের অন্তর
৪।জয়তুন গাছ=গুরু
৫।জয়তুন তেল=আবে হায়াত
৬।নূরের ওপর নূর=ভক্তের ওপর গুরুর আশ্রয়
কয়েকটি সাধনের বিষয়ঃ
১।তানজিয়া=আউযুবিল্লাহ হিমিনাশ শয়তানীর রাজীম
২।তাসমিয়া=বিসমিল্লাহ হির রহমানির রহীম
৩।অরুজ=পাক কলেমা/ভাল দিক
৪।নজুল=নাপাক কলেমা/খারাপ দিক
৫।রাজহংস=সাধুত্ব
৬।মোরাকাবা মোশাহেদা=নূর দর্শন
৭।গৌড়াঙ্গ মুরতি=গৌড় বরন।
সংগৃহীত 

রবিবার, ৫ জুন, ২০২২

মুরিদের প্রকার

মুরিদের প্রকারভেদ ও বিবরণ।
*******************************

মুরিদ মোট ১১ প্রকার;
যথা:-
১। দাস মুরিদ,
২। খাস মুরিদ,
৩। আম মুরিদ,
৪। অকাল জ্ঞানি মুরিদ,
৫। তার্কিক মুরিদ,
৬। কামুক মুরিদ,
৭। লোভী মুরিদ,
৮। আধা মুরিদ,
৯। ভাব মুরিদ,
১০। সাইনবোর্ড মুরিদ,
১১। আসল মুরিদ। 

সংক্ষেপে বিবরণ-
*******************
১। দাস মুরিদ=যে পীর সাহেব উনার খিদমতে কাটিয়া দেয়,পীর সাহেব উনার খিদমত তার জীবনের লক্ষ সে হল দাস মুরিদ/এই মুরিদের অধিকাংস দিব্য দৃষ্টি লাভ করে।

২। খাস মুরিদ=যে পীর সাহেব উনার হাতে মুরিদ হইয়াছে এবং পীর সাহেব উনার আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে সে হলো খাস মরিদ,মৃতুর পর তার মুক্তি নিশ্চিত,তার দেহ মাটি খাবে না।

৩। আম মুরিদ=যে নাম মাত্র মুরিদ হয় কিন্তু পীর সাহেব উনার কথার কোন ধার ধারে না সে হল আম মুরিদ। এদের মুরিদ হওয়া না হওয়া সমান।

৪। অকাল জ্ঞানি মুরিদ=যে পীর সাহেব উনার হাতে মুরিদ হয় ঠিকই কিন্তু পীর সাহেব উনার বাক্য অগ্রহ্য করে এক লাইন বেশি বোঝে,সে হল অকাল জ্ঞানি মুরিদ। এই সব মুরিদ সিরাতল মুস্তাকীমের পথ পাবে না।

৫। তার্কিক মুরিদ=যে পীর সাহেব উনার হাতে মুরিদ হইয়া নিজের জ্ঞান জাহির করে শুধু তর্ক করে মজা পায় সে হলো তার্কিক মুরিদ। সে কখনো মরেফত লাভ করিতে পারিবে না।

৬। কামুক মুরিদ=যে পীর সাহেব উনার হাতে মুরিদ হয় ঠিকই কিন্তু মন হতে কাম বাসনা ছাড়তে পারে না, সুন্দরী মেয়ে দেখলেই ঠিক থাকতে পারে না, সে হলো কামুক মুরিদ। এই মুরিদের সিজ্জিল দোযখে যাওয়ার সম্ভবনা বেশি।

৭। লোভী মুরিদ=যে পীর সাহেব উনার হাতে মুরিদ হয় কিন্তু নারী ও ধন সম্পদের লোভ ছাড়তে পারে না, সে হল লোভী মুরিদ। এই সব মুরিদ পীর সাহেব উনার নাম কলংকিত করে।

৮। আধা মুরিদ=যে পীর সাহেব উনার হাতে মুরিদ হয়ে মনের অর্ধেক দেয় পীর সাহেবকে আর অর্ধেক দেয় দুনিয়াতে, তারা হল আধা মুরিদ। এই সব মুরিদের সারা জীবন কাটে শয়তানের ধোকায়।

৯। ভাব মুরিদ=যে পীর সাহেবকে দেখে নাই, (বিছাল শরীফ গ্রহন করা পীর সাহেব) তাহার জীবন পীর সাহেব উনার আদেশে পরিচালনা করে,তাকে বলে ভাব মুরিদ। এই মুরিদের আখেরাত উজ্জল।

১০। সাইন বোড মুরিদ=যে পীর সাহেব উনার হাতে মুরিদ কিন্তু পীর সাহেব উনার কাছে যায় না, শুধু মুরিদের বেশ ধরে চাপা মেরে বেড়ায়, বাবা মার খেদমত করে না, আর তলে তলে গাজা খায়, সে হল সাইন বোড মুরিদ। এদের ভবিষ্যত অন্ধকার।

১১। আসল মুরিদ =যে মরনের আগে মরে,নিজের সব কিছু পীর সাহেব উনার কাছে সমর্পন করে আমিত্ত বলতে কিছু থাকে না, দুনিয়ার কোন চিন্তা নাই পীর সাহেব তাহার কাছে সব কিছু, সে হলো আসল মুরিদ, এই সব মুরিদ আল্লাহর মেহমান। 

হে পাঠক!  জীবন আপনার তাকে সুন্দর করে সাজানোর দায়িত্বও আপনার।

(সংগৃহিত)

শনিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২২

দেহ তত্ত্ব


দেহতত্বে পাচ মোকামে পাচ মহামানবের অবস্তান:-
১:মোকামে মাহমুদা - হযরত মোহাম্মদ (সঃ)
২:সুলতানুন নাসিরা - খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী (রঃ)
৩:মুওয়াহেদ মোকাম - বড়পির আবদুল কাদের জিলানি ( রঃ)
৪:মাকামে ইব্রাহিম - হযরত ইব্রাহিম (আঃ)
৫:ওরাওল ওরা মাকাম - ইমামা হাসান ও হোসেন (আ:)
দেহতত্ব বেহেস্তের চার নহরঃ
১। কাওসারের পানি = স্বচ্ছ বিবেক
২ । দুধের নহর = সুখ্য জ্ঞান
৩।মধুর নহর =খোদার সানিধ্য অনূভতি
৪।শারাভান্তহুরা =খোদার প্রেমের নেশারুপক অর্থকে ভাবার্থে প্রকাশ।
দেহতত্বে একিন সমুহ:-
১।বেল গায়েব = কর্ণ দারা
২।এলমল = গ্যান ধারা
৩।আইনুল = চোখের ধারা
৪।হাক্বুল = বিবেক ধারা
৫।হুওয়াল = মন দ্বারা
দেহতত্ব সৃষ্টির বিবরন:-
পুরুষের ১ = মন থেকে চন্দ্র
২ =চোখ থেকে সুর্য়
৩ = কর্ন থেকে বায়ু ও প্রান
৪ =মুখ থেকে অগ্নি
৫ = নাবি থেকে আন্তরিখ্য
৬ =মস্তক থেকে স্বর্গ
৭ = পদদ্বয় থেকে ভুমি
শ্রোএ থেকে দিক সকল সৃষ্টি !!
দেহতত্ব লিঈ ৩ প্রকার যথা !
১ পুং লিঙ্গ ২ স্ত্রী লিঙ্গ
৩ নপুংশ. বা ব্রহ্ম লিঙ্গ শেষের টাই
প্রেমের লিঙ্গ এটাই সাধুরা বেশি ব্যাবহার করে!
দেহতত্ব মহলের বিবরন:-
১।রং মহল = মুখমন্ডল
২।স্বর্ণ মহল =বুক
৩।আয়না মহল =চোখ
৪।মনি মহল = মনি মগজ! !
দেহতত্ব জিকির চার প্রকার যথা!
১।লেছানি - মুখের
২।পাছ আনফাছ - দমের
৩।আয়নি - চোখের
৪। ক্বলবি - ক্বলবের দেহতত্ব
১।বোরাখ =নারী লোক
২।রফরফ = দমের বাহন
৩।হাজারে আসওয়াদ = স্ত্রী লিঙ্গ
৪।সাদরাতুল মুনতাহা = কপাল দেশ
৫।বাইতুল মামুর =পুনার্ঈমানবদেহ
৬।জাহান্নাম = পেট থেকে নিম্ন দেশ
১। আরশ - মন
২।কুরসি - দেহ
৩।লওহে মাহফুজ স্মৃতি ফলক
৪। আসমান - মাথা
৫।জমিন - শরীর
৬।পাহাড়-বুক
দেহতত্ব লোকের নাম হলোঃ-
১।দ্যুলোক -মাথা
২।ভূলোক -দেহ জগত
৩।অন্তরিখলোক -হৃদয় বা ব্যুম
দেহতত্ব সিদ্ধর ৪ টি চাবি-
১।দমেহরদম
২।নেগা বারকদম
৩।হুশদরধম
৪। সফর করদম
তেহতত্ব পাকপান্জাতনঃ-
১।গোসা - মা ফাতেমা
২।সাদা পর্দা -হযরত আলী
৩।পানি - ইমাম হাসান ও হোসেন
৪।কুসুম - নুর নবী
৫।মনি কুসুম - আপে আল্লাহ এগুলা
মাতৃ গভের্র রুপক রুপ !
দেহতত্ব দেহের চার ইমামঃ-
১।জিহবা - জিব্রাইল
২।নাক -ইস্রাফিল
৩।কান ও চোখ- মিকাইল
৪।মনি-মগজ - আজরাইল।।

বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২২

আল্লাহ নিরাকার নয়!আকার আছে-দলিল

আল্লাহর আকার আদমের  এবং মানুষের আকারে আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান,
কোরআন হাদিস দিয়ে দলিল দিলাম।
========

আল্লাহকে যে পাপিষ্ঠ নিরাকার বলবে নিঃশ্চয় সে মিথ্যাবাদী মোনাফেক কাফের এবং সেই জাহান্নামী কারণ নিরাকার মানেই কিছুই নেই সরাসরি আল্লাহকে অস্বীকার করা তাই সাবধান সাবধান সাবধান আল্লাহ নিরাকার নয় আল্লাহর আকার আছে।

আল্লাহর আকৃতি রয়েছে, যেমন সূরা সাদের ৭৫ নং আয়াত - এবং ৩৬ নং আয়াতে - সুরা ইয়াসিনের ৭১ নং আয়াতে উল্লেখ রয়েছে, আল্লাহর হাত রয়েছে - সূরা কালামের ৪২ নং আয়াতে উল্লেখ রয়েছে - আল্লাহর পা রয়েছে। সূরা কলমে ৪২ নং আয়াতে" সাক্কি" শব্দ রয়েছে, যার অর্থ পা/ পায়ের পাতা / পায়ের গোছা। সূরা কাসাস এর ৮৮ নং আয়াতে উল্লেখ রয়েছে, আল্লাহর চেহারা ধ্বংস হবে না।

সূরা কাসাস ২৮ নং আয়াতে ওয়াজহাহু শব্দ রয়েছে। ওয়াজহা" শব্দের অর্থ চেহারা, মুখ মন্ডল এবং" হু" শব্দের অর্থ তাঁর। অর্থাৎ" ওয়াজহাহু" শব্দের অর্থ" তাঁর চেহারা" বুঝতে হবে। আর তাঁর চেহারা বলতে যে আল্লাহর চেহারা বুঝতে হবে তার প্রমান সুরা বাকারার ১১৫ নং আয়াতের" ওয়াজহুল্লাহি" শব্দটি।  ওয়াজহুল্লাহি" শব্দের অর্থ আল্লাহর চেহারা। আবার  সুরা লাইলের ২০ নং আয়াতে" ওয়াজহিরাব্বাহি" শব্দ রয়েছে, যার অর্থ" তার রবের চেহারা। এখানে চেহারা বলতে মুখমন্ডল কে বুঝায়। আর মুখমন্ডল বলতে কপাল, চোখ, নাক, মুখ, গাল, মাথা, গলা, কান, তথা একটা কাঠামোকেই বুঝায়। 

আবার বলা হয়েছে, আল্লাহ শুনেন সূরা আল বাকারার ১৩৭ নং এবং ১২৭ নং আয়াত, সূরা নিসা আয়াত নং ৫৮ -  সূরা নিসা আয়াত নং ১৪৮ - সূরা আন নূর আয়াত নং ৬০ - সূরা আসসূরা আয়াত নং ২২০ - সূরা হামিম আয়াত নং ৩৬ - সূরা আন নূর আয়াত নং ২১ এবং ২১৩ - সূরা বনী ইসরাইল আয়াত নং ১ - সূরা আল আম আয়াত নং ১১৫ - তার মানে আল্লাহর কান রয়েছে প্রমানিত হয়।

তিনি দেখেন সূরা হামিম আয়াত নং ৪০ - সূরা বনী ইসরাইল আয়াত নং ১ - তার মানে তাঁর চোখ রয়েছে প্রমানিত হয়। তিনি বলেন সূরা আল মুমিন আয়াত নং ৬০ - তার মানে মুখ, চেহারা রয়েছে প্রমানিত হয়। তিনি জানেন সূরা আল বাকারা আয়াত নং ১৩৭ এবং ১২৭/ ২২৭ - সূরা নিসা আয়াত নং ২২৭ - সূরা আল ইনসিকাক আয়াত নং ২২ -  সূরা হামিম আয়াত নং  ৩৬-  সূরা আন নূর আয়াত নং ২১ - সূরা আসসূরা আয়াত নং ২২০ - সূরা বনী ইসরাইল আয়াত নং ২৫ - সূরা নিসা আয়াত নং ১৪৮ - সূরা আল আহজাব আয়াত নং ৫১ - সূরা আন নূর আয়াত নং ৬০ - তার মানে আল্লাহর জ্ঞান রয়েছে প্রমানিত হয়। আর জ্ঞান রয়েছে মানে স্মৃতিভান্ডার রয়েছে প্রমানিত হয়। 

অনেকে বলেন আল্লাহর চেহারা, হাত, পা, চোখ, কান, বাস্তব নয়, কুদরতি চেহারা, অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কিন্তু না, তাদের বুঝার জ্ঞান আল্লাহ দেননি তারা অন্ধ বধির, কাদামাটি দিয়ে মানুষ তৈরি করেছেন সূরা সোয়াদ আয়াত নং ৭১ - আর কাদামাটি দিয়ে অবয়ব তৈরি করতে হাতের দরকার, বিধায় আল্লাহর হাত, পা, চেহারা বাস্তব সকল কিছু রয়েছে। কারণ মানুষ ব্যতীত অন্যান্য সৃষ্টি কুনফায়া কুন শব্দে সৃষ্টি করেছেন সূরা নাহর আয়াত নং ৪০ - সূরা আল বাকারা আয়াত নং ১১৭ - সূরা আল ইমরান আয়াত নং ৪৭ এবং ৫৯ - সূরা মারইয়াম আয়াত নং ৩৫ - সূরা আল আনাম আয়াত নং ৭৩ - ইয়াসিন আয়াত নং ৮২ - কিন্তু আদম আঃ কে কুনফায়া কুন শব্দে সৃষ্টি করা হয়নি।

তাছাড়া আল্লাহ তাঁর রুহ আদম আঃ এর মধ্যে ফুৎকার করে দিয়ে সূরা সোয়াদ আয়াত নং ৭২ - তাঁর মধ্যে থাকার সূরা ক্বাফ আয়াত নং ১৬ - সূরা আন ফাল আয়াত নং ২৪ - সূরা আল বাকারা আয়াত নং ১৮৬ - জন্য যে দেহটি সৃষ্টি করেছেন সেই দেহ অবয়বটি তাঁর মতই হবে অন্য কোন জীবের মতো হবে না। মানুষ মানুষের আকারই আল্লাহর আকার এটাই স্বাভাবিক।
 
আল্লাহ জাহের বা প্রকাশ্য আল হাদিদ আয়াত নং ৩ - প্রকাশ্য হতে গেলে আকারের ব্যাপার এসে যায়। নবী মুহাম্মাদ সাঃ আল্লাহ কে দেখেছেন সূরা আন নাজম  ৪-১৬ - সূরা আত তাকবীর আয়াত নং ২৩ - সূরা আর রাজ আয়াত নং ২ - 

মুসা আঃ আল্লাহ কে দেখেছেন সূরা নিসা আয়াত নং ১৬৪ - সূরা আস সাজদাহ আয়াত নং ২৩ - সূরা ত্বা হাঁ আয়াত নং ১২ - অনেক নবী রাসুল আল্লাহর সাক্ষাৎ করেছেন সূরা আল বাকারা আয়াত নং ২৫৩ - আল্লাহ তিনটি উপায়ে বান্দার সঙ্গে দেখাদেন, কথা বলেন সূরা আসসূরা আয়াত নং ৫১ - বিধায় এতে প্রমানিত হয় আল্লাহর আকার রয়েছে।
 
আবার সূরা সিজদার ৪ নং আয়াতে উল্লেখ রয়েছে, ৬ দিনে পৃথিবী তৈরি করে আল্লাহ আরশে আজিমে সমাসিন হলেন। যেখানে দাঁড়ানো এবং বসা উল্লেখ থাকে সেক্ষেত্রে অবশ্যই আল্লাহর একটি আকৃতি রয়েছে বলে প্রমান হয়। আর আল্লাহর সেই আকৃতিটাই হচ্ছে অতি উত্তম আকৃতি। আল্লাহ বলেন, আদমকে অতি উত্তম আকৃতিতেই তৈরি করা হয়েছে সূরা- তীন আয়াত নং ৪ - এবং সূরা মুমিন আয়াত নং ৬৪ - এবং সূরা রুমের ৩০ নং আয়াতে উল্লেখ রয়েছে, আল্লাহর প্রকৃতি অনুসারেই মানুষ তৈরি।
 
সূরা-ইনফিতর এর ৮ নং আয়াতে উল্লেখ রয়েছে, আল্লাহ বলেন, 'আমি যেমন ইচ্ছা আকৃতিতে মানুষ তৈরি করেছি, এইজন্য যে, যেন ইচ্ছামত ঐরূপে আহরণ করতে পারি।' এখানে উল্লেখ্য যে, এই আয়াতে 'আইয়ু' সূরত শব্দ এসেছে। আইয়ু শব্দের আপেক্ষিক অর্থ হচ্ছে যেমন (আরবি অভিধান পৃ. ৬৩৮) আইয়ু শব্দের সাথে যে শব্দ ব্যবহৃত হবে সেই শব্দের অর্থের সাথে আইয়ু শব্দের অর্থ নির্ভর করে, যেমন তুমি আমাকে যেমনটা ধাক্কা দিলে আমিও তোমাকে তেমনটা ধাক্কা দিলাম। এই আয়াতে আইয়ু সূরত শব্দ এসেছে বিধায় আল্লাহর যেমন সূরত, তেমন সূরতেই আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। এই আয়াতে 'রাক্কাবাকা' শব্দ এসেছে, 'রাক্কাবাকা' শব্দের অর্থ হচ্ছে আহরণ করা (আরবি অভিধান, পৃ. ১৩৭৪)। যেন ইচ্ছামত আল্লাহ মানব রূপে আহরণ করতে পারে। উপরিউক্ত আলোচনায় বুঝা যায় যে, আল্লাহ পাকের নিজ আকৃতি ও প্রকৃতি অনুসারে মানুষ তৈরি করেছে। 

মহান আল্লাহ তায়ালার আকার বা
আকৃতি আছে নাকি তিনি নিরাকার?
অনেকেই আক্বীদাহ (বিশ্বাস) পোষণ
করে যে, মহান আল্লাহ তায়ালার কোন
আকার বা আকৃতি নেই তিনি
নিরাকার অথচ তাদের এই বিশ্বাস
সঠিক নয় বরং এ ধরনের বিশ্বাস হল
কুরআন ও হাদিসের বক্তব্যের সাথে
সাংঘর্ষিক। কারণ, পবিত্র কুরআন ও
সহীহ হাদিসের কোথাও বলা নেই যে, আল্লাহ তয়ালা নিরাকার তাঁর কোন
আকার নেই। কিন্তু অন্যদিকে, পবিত্র
কুরআন ও সহীহ হাদিস বলছে যে,
আল্লাহর আকার আছে তিনি
নিরাকার নন। মুসলিমরা জান্নাতে
আল্লাহর চেহারা দর্শন করবে।
এই ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা ১৫০০
বছর পূর্বেই সবকিছু পরিস্কার ভাবে
পবিত্র কুরআনে বলে দিয়েছেন।
কেউ যদি বলে, আল্লাহ তায়ালার
হাত, পা, চোখ, চেহারা নেই তাহলে
কুফরী হবে।

এমনিভাবে কেউ যদি বলে আল্লাহ তায়ালার কুদরতী হাত, পা, চোখ, চেহারা আছে অর্থাৎ মৌলিক হাত, পা, চোখ, চেহারা নেই তাহলেও শিরক হবে। কুদরত হল বিশেষ্য, তার বিশেষণ অবশ্যই থাকতে হবে। কারণ, কোন বিশেষ্য ছাড়া বিশেষণ হয় না।
তাই কুদরতী হাত, পা, চোখ, চেহারা হলে মৌলিক হাত, পা, চোখ, চেহারাও থাকতে হবে। অতএব আল্লাহ তায়ালার মৌলিক
হাত, পা, চোখ, চেহারাও রয়েছে।

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ(কিয়ামতের দিন) ভূপৃষ্ঠের সবকিছুই ধবংস হয়ে যাবে (হে রসূল!) আপনার মহিমাময় ও মহানুভব রবের সত্তা অর্থাৎ চেহারাই একমাত্র বাকী
থাকবে।" [সূরা আর-রহমান আয়াত নাম্বার:--২৭],
আল্লাহর সত্তা বা চেহারা ব্যতীত সব কিছু ধ্বংস হবে। [সূরা আল-কাসাস আয়াত নাম্বার:- ৮৮], পূর্ব ও পশ্চিম এর মালিক আল্লাহ, তোমরা যে দিকেই তোমাদের মুখমণ্ডল ফিরাবে সেদিকেই আল্লাহর চেহারা থাকবে। [সূরা আল-বাকারাহ আয়াত নাম্বার:- ১১৫],
(কিয়ামতের দিন) কোন কোন মুখমন্ডল
উজ্জল হবে, তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে থাকবে। সূরা ক্বিয়ামাহ আয়াত নাম্বার:- ২২-২৩]।
জাবির বিন আবদিল্লাহ হতে বর্ণিত।
তিনি বলেন, যখন এ আয়াত নাযিল
হলঃ "বল, সেই আল্লাহ ক্ষমতা রাখেন
তোমাদের উপর আযাব নাযিল করার
তোমাদের ঊর্ধ্ব দিক হতে" রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, 'আমি তোমার চেহারার আশ্রয় চাই।' অথবা তোমাদের পায়ের নীচের দিক হতে" রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, 'আমি তোমার চেহারার আশ্রয় চাই।
[বুখারী ২য় খণ্ড ৬৬৬ পৃষ্ঠা, ইবনু কাসীর
২য় খণ্ড ১৮৯ পৃষ্ঠা],

রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহর চেহারা
নূরে পরিপূর্ণ।" [মুসলিম হাঃ ১৭৯],
রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জান্নাতবাসীগন তাকে তেমনিই দেখতে পাবেন, যেমন পূর্ণিমার রাত্রে মেঘশূন্য আকাশে চন্দ্র প্রত্যক্ষ করা যায়।
[বুখারী হাঃ ৫৫৪, মুসলিম হাঃ ৬৩৩।]

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ "আমি
আমার নিকট হতে তোমার উপর ভালবাসা ঢেলে দিয়েছিলাম, যাতে তুমি আমার চোখের সামনে পতিপালিত হও।
[সূরা ত্বাহা আয়াত নাম্বার:- ৩৯],

হে রসূল! আপনি আপনার রবের নির্দেশের অপেক্ষায় ধৈর্যধারণ করুন,আপনি আমার চোখের সামনেই রয়েছেন।
[সূরা আত-তূর আয়াত নাম্বার:- ৪৮],

নিশ্চয়ই আল্লাহ শ্রবণ করেন ও দেখন।
[সূরা আল-মুজাদালাহ আয়াত নাম্বার:-
০১]
আর আপনি আমার সম্মুখে আমারই
নির্দেশ মোতাবেক একটি নৌকা তৈরী করুন এবং পাপিষ্ঠদের ব্যাপারে আমাকে কোন কথা বলবেন না। অবশ্যই তারা ডুবে মরবে। [সূরা হুদ আয়াত নাম্বার:- ৩৭],

কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব
শুনেন, সব দেখেন। [সূরা আশ-শুরা আয়াত নাম্বার:- ১১]

আল্লাহকে দুনিয়ার কোন চোখ দেখতে
পারে না বরং তিনিই সমস্ত চোখকে দেখতে পারেন। তিনি অতিশয় সূক্ষ্মদর্শী এবং সর্ব বিষয়ে জ্ঞানী। [সূরা আল-আনআম আয়াত নাম্বার:-১০৩]।
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত।
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
তোমাদের প্রভু অন্ধ নন।
[বুখারী ২য় খণ্ড ১০৫৫-১০৫৬ পৃষ্ঠা,
মুসলিম।]

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ " আর
ইহুদীরা বলেঃ আল্লাহর হাত বন্ধ হয়ে
গেছে। তাদেরই হাত বন্ধ হোক। একথা
বলার জন্যে তাদের প্রতি অভিসম্পাত।
বরং তাঁর উভয় হস্ত উম্মুক্ত। তিনি যেরূপ
ইচ্ছা ব্যয় করেন। আপনার প্রতি পলন কর্তার পক্ষ থেকে যে কালাম অবর্তীণ হয়েছে, তার কারণে তাদের অনেকের অবাধ্যতা ও কুফর পরিবর্ধিত হবে। আমি তাদের পরস্পরের মধ্যে কেয়ামত পর্যন্ত শত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিয়েছি। তারা যখনই যুদ্ধের আগুন প্রজ্জিত করে, আল্লাহ তা নির্বাপিত করে দেন। তারা দেশে
অশান্তি উৎপাদন করে বেড়ায়। আল্লাহ অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদেরকে পছন্দ করেন না।
[সূরা আল-মায়িদাহ আয়াত নাম্বার:-৬৪],

হে ইবলীস! আমি নিজ হাতে যাকে সৃষ্টি করেছি, তার সামনে সিজদাহ করতে তোমাকে কিসে বাঁধা দিলো?
[সূরা স্বদ আয়াত নাম্বার:- ৭৫]

(এখানে হাত অর্থ হাতই, এর অর্থ শক্তি
বা কুদরত নয়।) বরকতময় ঐ সত্তা যাঁর হাতে রাজত্ব তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান। [সূরা আল-মূলক আয়াত নাম্বার:- ১],

আল্লাহর দুই হাত তো উদার ও উন্মুক্ত।
তিনি যেভাবে ইচ্ছা খরচ করেন। [সূরা আল-মায়িদা আয়াত নাম্বার:-৬৪],

তারা আল্লাহকে যথার্থরুপে বুঝেনি।
কিয়ামতের দিন পুরো পৃথিবী তাঁর হাতের মুঠোতে এবং আসমানসমূহ ভাজ করা অবস্থায় থাকবে তাঁর ডান হাতে। তিনি পবিত্র। আর তারা যা শারীক করে তা থেকে তিনি অনেক উর্ধ্বে।"
[সূরা আয-যুমার আয়াত নাম্বার:- ৬৭]।

আবদুল্লাহ বিন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,পাদ্রীদের একজন পাদ্রী রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম 
এর নিকট এসে বলল, হে মুহাম্মাদ!
আমরা চাই যে, আল্লাহ (কিয়ামত দিবসে) আসমানসমূহ এক আঙ্গুলের উপর, যমীন সমূহ এক আঙ্গুলের উপর, গাছসমূহ এক
আঙ্গুলের উপর, পানি-কাদা এক আঙ্গুলের উপর এবং সমস্ত সৃষ্টি এক আঙ্গুলের উপর করে বলবেন, আমি বাদশাহ। একথা শুনে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাদ্রীর কথাকে সত্যায়িত জন্য হেঁসে দিলেন। এমনকি তাঁর নাওয়াজেয দাঁত প্রকাশ পেল। অতঃপর রসূল সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম (এ আয়াত) পাঠ
করলেন- "তারা আল্লাহকে যথার্থরূপে
বুঝেনি। কিয়ামতের দিন সমগ্র পৃথিবী
তাঁর হাতের মুঠোতে থাকবে।"
[বুখারী ২য় খ খণ্ড ৭১১ পৃষ্ঠা, মুসলিম ২য়
খণ্ড ৩৭০ পৃষ্ঠা, ইবনু কাসীর ৪র্থ খণ্ড ৮০
পৃষ্ঠা],

রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "আল্লাহ নিজ হাতে তাওরাত লিখেছেন। [বুখারী হাঃ ৬৬১৪, মুসলিম 
হাঃ ২৬৫২],

রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "আল্লাহর উভয় হাতই ডান।
[মুসলিম হাঃ ১৮২৭],

রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "আল্লাহর
আংগুলের কথাও মুমিন বিশ্বাস করে।
[বুখারী হাঃ ৭৫১৩, মুসলিম হাঃ ২৭৮৬।]।

মহান আল্লাহ তায়ালার পাঃ মহান আল্লাহ তায়ালার যেরূপ পারয়েছে তদরূপ তাঁর পায়ের পিণ্ডুলীও রয়েছে, মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ যেদিন পায়ের গোছা বা পিণ্ডলী প্রকাশ করা হবে, সেদিন তাদেরকে
সিজদাহ করতে আহবান করা হবে, অতঃ পর তারা সিজদাহ করতে সক্ষম
হবে না। [সূরা আল-ক্বালাম আয়াত নাম্বার:-
৪২]

আনাস বিন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
"জাহান্নামের মধ্যে পাপীদের নিক্ষেপ করা হবে আর জাহান্নাম বলবে আরও এর থেকে বেশী আছে কি? তিনি তার পা জাহান্নামের মধ্যে রাখবেন। অতঃপর জাহান্নাম বলবে
যথেষ্ট হয়েছে, যথেষ্ট হয়েছে। অপর
বর্ণনায় আছে জাহান্নাম বলবে আরও
অতিরিক্ত আছে কি? অতঃপর বরকতময়
মহান রব্ব আল্লাহ তাঁর পা জাহান্নামের উপর রাখবেন। অতঃপর জাহান্নাম বলবে যথেষ্ট হয়েছে, যথেষ্ট হয়েছে।" [বুখারী ২য় খণ্ড ৭১৯ পৃষ্ঠা, ইবনু কাসীর
৪র্থ খণ্ড ২৮৯-২৯০ পৃষ্ঠা],

আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আমাদের প্রভূ তাঁর পায়ের গোছা বা পিণ্ডলী প্রকাশ করবেন। অতঃপর তাঁর জন্য সকল মুমিন, মুমিনাহ সিজদাহ করবে এবং বাকী
থাকবে ঐ সমস্ত লোক যারা দুনিয়াতে
লোক দেখানো সাজদাহ করতো। তারা
সিজদাহ করতে যাবে অতঃপর তাদের
পিঠ এক তাবকা বা বরাবর হয়ে যাবে।"
[বুখারী ২য় খণ্ড ৭৩১ পৃষ্ঠা, ইবনু কাসীর
৪র্থ খণ্ড ৫২৪ পৃষ্ঠা]।

রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, বান্দা তাওবাহ করলে খাদ্য-পানীয় বোঝাই করা উট মরু সফরে হারিয়ে গিয়ে ফিরে পাওয়ার পর মুসাফির যত খুশি হতে পারে তার থেকেও বেশি খুশি হন তিনি। [বুখারী, মুসলিম হাঃ ৫০৩০।],

(আল্লাহর খুশি কোন সৃষ্টির খুশির মত
নয়।) উল্লিখিত আয়াতসমূহ ও হাদিসসমূহ
দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, মহান আল্লাহ তায়ালার চেহারা, হাত, চোখ, পা আছে; তিনি অবয়বহীন নন; বরং তাঁর অবয়ব রয়েছে যদিও আমরা সেটার ধরণ বা রূপ সম্পর্কে কোনো কিছুই জানি না। তবে আমাদেরকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে, মহান আল্লাহ তায়ালার শ্রবণ-দর্শন ইত্যাদি মানুষের শ্রবণ-দর্শনের অনুরূপ নয়।
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ কোন কিছুই তাঁর সাদৃশ্য নেই অর্থাৎ কোন কিছুই তাঁর (আল্লাহর) অনুরূপ নয়। তিনি সবকিছুই শুনেন এবং দেখেন। [সূরা আশ-শুরা আয়াত নাম্বার:- ১১]।

রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, পার্থিব জগতে মানব-দানবের জন্য আল্লাহ পাক অদৃশ্য। [মুসলিম হাঃ ১৬৯, ১৭৭]।

ইহকালে অর্থাৎ দুনিয়ার জীবনে আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের কাছে অদৃশ্য থেকেই গায়েবী ঈমান আনার নির্দেশ দিয়েছেন। অদৃশ্যভাবেই তাকে জানা ও চেনার এবং তাঁর একত্ববাদ ও প্রভুেত্ব বিশ্বাস স্থাপন
করার আদেশ দিয়েছেন। যদি তিনি
বান্দাদের দৃশ্যমান হতেন, তাহলে নবী-
রসূল, কিতাব, কারোর উপদেশ ও নসীহত
ছাড়াই সারা জগতবাসী মুমিন হয়ে
যেত। তাঁর কোন আদেশ কেউ অমান্য
করতো না। কিন্তু মহাপরীক্ষার জন্যই
তিনি অদৃশ্য আছেন। তবে পরকালে
অর্থাৎ মৃত্যুর পরবর্তী জীবনে আল্লাহ
তায়ালা জান্নাতবাসীদেরকে দর্শন
দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ(কিয়ামতের দিন) কোন কোন মুখমন্ডল উজ্জল হবে, তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে দৃষ্টি দিয়ে
তাকিয়ে থাকবে।" [সূরা ক্বিয়ামাহ আয়াত নাম্বার:- ২২-২৩]।

রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জান্নাতবাসীগন তাকে তেমনিই দেখতে পাবেন, যেমন পূর্ণিমার রাত্রে মেঘশূন্য আকাশে চন্দ্র প্রত্যক্ষ করা যায়।"
[বুখারী হাঃ ৫৫৪, মুসলিম হাঃ ৬৩৩।]

(তবে সে দেখার কোন উপমা বা দৃষ্টান্ত নেই।) আল্লাহ তায়ালার আকার বা আকৃতি
সম্পর্কে ইমাম আবূ হানিফা রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ আল্লাহ তায়ালার মুখমণ্ডল ও দেহ আছে যেমন মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র
কুরআনে বর্ণনা করেছেন। পবিত্র কুরআনের বর্ণনায় আল্লাহ তায়ালার যে চেহারা, হাত, দেহের যে বর্ণনা দেয়া হয়েছে তা আল্লাহ তায়ালার দৈহিক বৈশিষ্ট। আমরা তাঁর ঐ সকল অঙ্গের বিষদ বিবরণ অবগত নই। কেউ যেন আল্লাহ তায়ালার হাতকে কুদরতী হাত বা তাঁর নেয়ামত না বলে। কেননা তাতে তার সিফাত বা গুনাবলীকে
অস্বীকার করা হয়। আর যারা কুদরতী
হাত বলে তারা কাদরিয়াহ ও মুআযিলাহ সম্প্রদায়ের লোক। (ইমাম আবূ হানীফার ফিকহুল আকবার মোল্লাহ আলী কারী হানাফীর শরাহসহ দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ বৈরুত ৫৮-৫৮ পৃষ্ঠা)।

সুতরাং মহান আল্লাহ তায়ালার আকারগত বৈশিষ্ট্যসহ যাবতীয় গুণাবলীর ক্ষেত্রে আমাদেরকে এই চারটি বিষয় মনে রাখতে হবেঃ ১। এগুলো অস্বীকার করা যাবে না,
২। অপব্যাখ্যা করা যাবে না, ৩। সৃষ্টির সাথে সাদৃশ্য করা যাবে না এবং ৪। কল্পনায় ধরণ, গঠন আঁকা যাবে না। পবিত্র কোরআন থেকে সূরা এবং আয়াত নং সহ উপস্থাপন করার পরে কোন বেদিন পথভ্রষ্ট জাহান্নামিরা বলবে আল্লাহর আকার নাই।
আল্লাহ আদম সুরত এবং মানুষের আকারে এটাই স্বাভাবিক এবং সত্য।

রবিবার, ২৭ মার্চ, ২০২২

লুৎফার জন্ম দিন

০৫ জুলাই,২০০০ ইং

লুৎফার লেখা

হৃদয়ের অলিখিত যত কাব্য - আজ তোমায় নিয়ে
বিষাদ সিন্ধুর কল্লোল হারায় - তোমার  হাসির স্রোতে
এলোমেলো ভাবনাগুলো সাজে - তোমায় ঘিরে
বিশ্বাস-অবিশ্বাসের উর্দ্ধে উঠে মন - তোমায় নিয়ে
পাওয়া-না পাওয়ার হিসেব গুলো - তোমার খাতায় শূন্য
তোমার কথার কলকাকলিতে - শূন্য হৃদয় পূর্ণ
ভেঙ্গে যাওয়া সব বাঁধ গুলো আজ - তোমার জন্য গড়ে
তোমার বদনখানি মলিন হলে - হিয়ার ভেতর পুড়ে
তোমার দুষ্টুমিতে ভরা চোখের দৃষ্টি - মনে আনন্দস্রোত তোলে
শত যাতনার মাঝে ও মন - তোমায় দেখে ভুলে
তোমার ইচ্ছে স্রোতে মনখানি আজ - গা ভাসাতে চায়
তোমার যত শত হৃদয় ক্ষত - মন পূর্ণ করতে চায়
প্রেমিক চায় প্রেমিকের তৃপ্তি - আত্নতৃপ্তি চায় না সে
তোমার দৃষ্টির গভীর থেকে গভীরতরে ছুটে মন - সেই প্রেমিকের সন্ধানে
 
বি:দ্র:- আমি অখাঁটি ই রয়ে গেলাম!!! 
                               
       উৎসর্গ:- আমার প্রাণ প্রতিম প্রিয়তম "সাজু"

রবিবার, ২০ মার্চ, ২০২২

সেজদায়ে তাজেমী

সেজদায়ে তাজিমি কি ও কেন ?

সেজদায়ে তাজিমির বিরুদ্ধে বানানো হয়েছে একটি মাত্র হাদিস। তাও আবার হাদিসখানা একজনের দ্বারা বর্ণিত। পৌনে দু'শত বছর আগে উনি যাদের কাছে শুনেছেন উনাদের নামধাম বলতে না পারলেও উনি বলেছেন। মানুষ মানুষকে সেজদা দেবে এটা পছন্দ হবার কথা নয়। যত বড় দলিলই দেওয়া হোক না কেন, মানুষ যেহেতু আমিত্বের চার দেয়ালে বাস করে তাই সেজদায়ে তাজিমিকে হারাম বলা হয়েছে। অবশ্য সবাই নয়। কিছু কিছু আলেমেরা এর বিরোধিতা করেছে এবং করছে। কোরানের সূরা ইউসুফের একশত নম্বর আয়াতের পরিষ্কার দলিলটি যদি দেখিয়ে সেজদায়ে তাজিমির কথাটি বলতে চান, তবু মেনে নেবে না। কারণ যারা কিছুতেই মানবে না তাদের মানাবেন কেমন করে? এই সামান্য কথাটির যে কত দলিল কোরানে দেওয়া হয়েছে তাও কি বলতে হবে? যদি নাসেক মনসুখের কথা উঠাতে চান, তাহলে আজ পর্যন্ত এই সূরা ইউসুফের একশত নম্বর আয়াতটি মনসুখ করা যায় নাই। কারণ এই আয়াতটি মনসুখ করতে হলে অন্য আয়াতের প্রয়োজন। কিন্তু কোরানে এ রকম স্পষ্ট আয়াতের বিরুদ্ধে দলিল দেবার মতো একটি আয়াতও নেই । মওলানা জালালুদ্দীন সয়ুতির মতো জাঁদরেল আলেম এবং মোল্লা জীউনের মতো শরিয়তের সূক্ষ্মদর্শী ব্যক্তি এই আয়াতটিকে মনসুখ করে যাননি। মাত্র একজনের বর্ণিত হাদিস, যাকে হাদিসে ওয়াহেদ বলা হয় তথা খুবই দুর্বল হাদিস, সেটিকে সামনে রেখে কোরানের আয়াতটিকে কেটে দেয়। অথচ চার ইমাম বলেছেন কোরানের আয়াতকে কোন হাদিস দিয়েই কাটা যায় না এবং যাবার প্রশ্নই উঠতে পারে না। এতকিছু জানবার পরও তারা সেজদায়ে তাজিমিকে হারাম করেছে। কারণ সেজাদায়ে তাজিমি এদের কাছে পছন্দ হয় না। পছন্দ হয় না ভালো কথা, তাই বলে কি হারাম করে দেবেন? এতবড় সত্যটিকে হারাম যে করা যায় না কোন অবস্থাতেই, তাও বোধ হয় এদের জানা থাকার কথা। যারা প্রকৃত জ্ঞানী, যারা জ্ঞান গবেষণাকে আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধা ও সমীহ করেন তারা জানেন যে, এই সেজদায়ে তাজিমি জায়েজ অর্থাৎ হারাম নয়। কারণ মহানবীকে প্রাণীরা যে সেজদা করেছে তারও বহু দলিল আছে। প্রাণীরা সব সময় তৌহিদে বাস করছে। এটা আমার কথা নয় বরং কোরানের ঘোষণা। সুতরাং প্রাণীকুল তৌহিদে বাস করছে বলা হলে শেরেক করার প্রশ্নই আসতে পারে না। কারণ যারা তৌহিদে সব সময় বাস করছে তারা কেমন করে শেরেক করে? শেরেক করার প্রশ্নই আসতে পারে না। অথচ মহানবীকে সেজদা করেছে। মহানবীকে সেজদা করা যদি শেরেক হতো, তাহলে তিনি মানা করতেন, পবিত্র পা মোবারক অবশ্যই সরিয়ে নিতেন। হযরত ইউসুফ (আঃ) অতি উঁচু মাপের নবী এবং তাঁর বাবা হযরত ইয়াকুব (আঃ) ও বড় নবী। তাদের নাম এবং ঘটনাবলী কোরানে বলা হয়েছে। হযরত ইউসুফ নবীকে উঁচু আসনে বসিয়ে তাঁর বাবা হযরত ইয়াকুব নবী সেজদা করলেন। আরবী শব্দটি হলো লাহু অর্থাৎ তাঁর পা মোবারকে। নবী নবীকে সেজদা করার দলিল কোরানে পেলাম। একটু ভেবে দেখুন তো! বিষয়টি অবাক করার মতো নয় কি? বাবা নবী ছেলে নবীকে সেজদা করছেন। আমরা সমাজে বাস করি। কিন্তু এখানে সমাজও কি কিছুটা অবাক হবে না? কারণ বাবা কেমন করে ছেলেকে সেজদা করেন? এই একবিংশ শতাব্দীতেও যদি এমন দৃশ্য আমরা দেখি, তাহলে অবাক-এর উপর অবাক হবো। আমাদের সমাজ বাবাকে ছালাম করতে বলে কিন্তু একি দৃশ্যের বর্ণনা কোরানে পাই যে, বাবা তাঁর ছেলেকে সেজদা করছেন। তাও আবার সবচাইতে ছোট ছেলেকে সেজদা করছেন। কেবল বাবাই সেজদা করেননি বরং সেই পরম প্রিয় মা-ও তাঁর ছোট ছেলেকে তথা ইউসুফ নবীকে সেজদা করলেন। আমরা জানি, মা এর পায়ের তলে সন্তানের বেহেস্ত। অথচ সেই মা সেজদা করছেন তাও আবার ছোট ছেলেকে। এই বিষয়টি আমাদের ভাবিয়ে তোলে। সেজদা দেবার মাঝে কি কোন বিরাট রহস্য লুকিয়ে আছে, যা আমাদের সাধারণ বিচার বুদ্ধিতে ধরা পড়ছে না? তারপর বড় বড় এগারো ভাইও সেজদা করলেন। কোরান কিন্তু সোজাসুজি বলছে এবং কোন রূপকের আশ্রয় নিয়ে নয়! এই সেজদাকে কোরান কিন্তু সেজদায়ে তাজিমি বলেনি, কেবল সেজদার কথা বলা হয়েছে। আমরা শাস্ত্রবিশারদরা এই সেজদাকে ভাগ করে নিয়েছি। তাই আমরা কোরানের বর্ণিত এই সেজদাকে “সেজদায়ে তাজিমি” ল। অনেক বড় বড় অলীরা তো এই সেজদাকে ভাগ করে বলেননি! আমি শাস্ত্রবিশারদদের পথ অনুসরণ করে বলছি যে এই সেজদা “সেজদায়ে তাজিমি” তথা সম্মানের সেজদা। কোরানের এই আয়াতটি হুবহু তুলে ধরছি এজন্য যে, দেখুন তো সেজদায়ে তাজিমির কথাটি বলছে কি-না! “ওয়া রাফা আবাওয়াইহি ওয়া খাররু লাহু সুজ্জাদা।” এর পরেও কি আমরা অস্বীকার করতে চাইবো? ভালো না লাগে সেজদা দেবেন না। তাই বলে কি ধানাই পানাই করে এবং অনেক কথার মারপ্যাচ দিয়ে নাজায়েজ করতে চাইবেন? এই বিবেকটাকে একটু নিরপেক্ষ করে দেখুন তো! আপনার বিবেক কি বলে? ভালো লাগে না অথবা মন চায় না তাই সেজদা করবো না বলা এক কথা। আর এরকম সেজদা করাটা নাজায়েজ বলা সম্পূর্ণ অন্য কথা। এর পরেও কি আপনি একটি মাত্র হাদিস তাও আবার সনদ ছাড়া, একজনের বর্ণিত, তাও আবার প্রায় দু'শত বছর পরে, এ রকম একদম দুর্বল হাদিস দিয়ে কোরানের আয়াতটিকে বাদ করে দিতে চাইছেন? যেখানে চার মাযহাবের চার ইমাম এবং যারা মাযহাব মানেন না তারাও এক বাক্যে বলছেন যে, হাদিস দিয়ে তা সেই হাদিস যত সহীহ হোক না কেন, সেই হাদিস দিয়ে কোরানের আয়াতকে বাদ বা অচল করাতো যাবেই না, বরং বাদ করার প্রশ্নই উঠতে পারে না। যারা হাদিস দিয়ে, কোরানের আয়াত বাদ করতে চাইবে তারা বিরাট ভুল এবং অন্যায় করবে। তারপরেও আমরা সেজদায়ে তাজিমির বিষয়টি নিয়ে মাঠে ময়দানে বাহাস করি। মুসলমান ভাইকে অনেক রকম ফতোয়া দিয়ে গালমন্দ করি। এই সামান্য বিষয়টি নিয়ে যদি মুসলমানে মুসলমানে মারামারি দলাদলি করি তাহলে নিম্নতম কর্মসূচীর ভিত্তিতে সবাই এক হতে পারবো কি? মহা ঐক্যের বদলে এই বড় ফাটলগুলো মুসলমানদেরকে কোথায় নামিয়ে এনেছে। এই বিষয়টি নিয়ে বড় বড় আলেমদের মতামত দলিলসহ তুলে ধরলেই কি সবকিছুর সমাধান হয়ে যাবে? কারণ যারা নাজায়েজ বলছেন আমি তাদের একটি মাত্র কথা বলেই শেষ করতে চাই যে, .............. (চলবে)

পর্ব _১

গ্রন্থ: সূফীবাদ আত্মপরিচয়ের একমাত্র পথ (পৃষ্ঠা: ১০৭-১০৮)

- চেরাগে জান শরিফ বিনয়ের সম্রাট ডা. কালান্দার বাবা জাহাঙ্গীর বা-ইমান আল সুরেশ্বরী।

মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ, ২০২২

কে ইমাম মাহদী আ.

আসুন যেনে নেই ইমাম মেহেদী (আ) কে? তিনি কি উপস্থিত আছেন নাকি আসার অপেক্ষায় আছেন।

একজন শুদ্ধ চিত্তের মানুষ পুত-পবিত্র তার ব্যাহিক এবং অভ্যন্তরীণ সকল কিছুই পবিত্র ও সৌন্দর্য মণ্ডিত কারন তিনি সালাতি, সালাতই হল সকল সৌন্দর্যের মুল। একজন সাধারণ মানুষ যখন সম্যক (পরিপূর্ণ,পরিপূর্ণতা একমাত্র নির্বানে (লা-মোকামে)) গুরুর কাছে এসে আত্মসমর্পণ করে তখন থেকে সে তার  জীন স্বভাব ত্যাগের মোহড়া দিতে শুরু করে এর পর রুপান্তরিত হয়ে ইনসান (যে তার ভুল সম্পর্কে জাগ্রত বা সচেতন) হন এর পর পর্যায় ক্রমে মোত্তাকী,সলেহী,আমানু,মোমিন হন যখন সে মোমিন হয় তখন সে অবস্থান করে জান্নাতে তাঁর পর সালাতের (ধ্যান) মাধ্যমে ধীরে ধীরে লা এর দিকে অগ্রসর হন তথা মোকামে মাহমুদার দিকে, নির্বানের দিকে কাফগুন (আল্লার ছয়টি গুনবাচন নামের সমষ্ঠি) সম্পূর্ণ হয়ে তিনি মুক্তির স্বাদ গ্রহন করেন অর্থাৎ তিনি এখন আর জন্ম মৃত্যুর অধিনে নেই সকল প্রকার বন্ধন মুক্ত হয়ে তিনি এখন স্বাধীন। কাফ শক্তির অধিকারী হয়েছেন তিনি। কাফ শক্তি গুলা নিচে তুলে ধরা হল।
১)ক্বাইউমুন= চিরস্থায়িত্বের শক্তি। ক্বাইউমু= স্থায়িত্ব নির্ধারিত করা হইল।
২)কুদ্দুসুন= দুর্বল এবং অধঃপতিতকে উন্নত মর্যাদা দানকারী শক্তি।
৩)ক্বাবিউন= চিরঞ্জীব শক্তির উৎস। ক্বাবিউ= সৃষ্ট শক্তিশালী হইয়া উঠিল।
৪) ক্বাদিরুন= সুপরিমিত দান কারী শক্তি। তক্বদির দাতা শক্তি।
৫)কাহ্‌হারুন= অপ্রতিহত ক্ষমতা। মৃত্যু দানকারী শক্তি। ক্বাহ্ হারু= ধ্বংসকারী। ‘না’ কে ধ্বংস করা হইল। অর্থ যাহা ক্ষণস্থায়ী এবং মিথ্যা তাহা ধ্বংস করা হইল। অর্থাৎ ‘যাহা নহে’ তাহাই ধ্বংস করা হইল।
৬)ক্বাবিদুন- ক্বাবিদু= নিয়ন্ত্রক। সৃষ্টকে নিয়ন্ত্রণ করা হইল। ভাঙ্গন ক্রিয়ার শক্তি বর্ধিত করিয়া সৃষ্টি হইতে কোন কিছু নিশ্চিহ্ন করিয়া ফেলার শক্তি সৃষ্টকে দান করা হইল।

মাওলা নজরুলের (আ) ভাষায় বললে এই ভাবে বলতে হয়। বল  বীর -বল  মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি’
       চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি’
       ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া
       খোদার আসন ‘আরশ’ ছেদিয়া,
       উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ববিধাতৃর!

এমন একজন সত্তাই হলেন ইমাম মেহেদী(আ). তিনি যুগে যুগে উপস্থিত আছে কামেল (জ্ঞানী) গুরু (যিনি অন্ধার থেকে আলোর দিকে নিয়ে যান) রুপে। একজন সম্যক গুরুই হলেন ইমাম মেহেদী (আ) তার কাছে গিয়ে আত্মসমর্পণ করে তথা আনুগত্যের বাইয়াত গ্রহন করে মুসলমান হতে হয়।

আমিই মওলা (তোমাদের অভিভাবক)
আমিই মাহদী(আমিই হেদায়ত কারী)
আমিই খিজির (অর্থাৎ আমার মধ্যে খিজির আ. এর
গুণাবলি বিদ্যাবান)

(বানীঃহযরত গাউছুল আজম ইমামুল আউলিয়া মাজহারে নুরে খোদা মওলা রহমান সৈয়্যদ গোলামুর রহমান বাবাভাণ্ডারী কেবলা কাবা)

সোমবার, ৭ মার্চ, ২০২২

অসমাপ্ত /লুৎফা

তুমি হলে আমার জন্য খোদার প্রেরিত এক "শামস তাব্রিজ" - যে জাহেরি জ্ঞানের অন্ধকার থেকে স্বর্গীয় আলোর দিকে নিয়ে যাচ্ছে!!
 অথবা তুমি এমনই!!
শুধু আমার জন্য নয় হয়তো - তুমি;
অথবা আমি যা উপলব্ধি করেছি - তাই! 
তৃপ্তি যে কষ্ট ভোগ করার মাঝে থাকে - আজ যে সেটাই খুঁজে পাই!
খুঁজেছিলাম সুখ এত দিন নিয়ম নীতির মাঝে - আজ তাই হারিয়ে যেতে মন পাগল পাগল সাজে!
আমার জন্য তুমি এক মহাসত্যের দিশারী - আমি তাই আজ নিজের মাঝেই অজানাকে খুঁজে ফিরি!
হর্ষ - বিষাদ, পাওয়া না পাওয়ার অঙ্ক হলো সাঙ্গ -
অসীমে যাওয়ার প্রবল বাসনায় - নিজেকে নিজেই ভাঙ্গব!
আমার মনের পিঞ্জর থেকে তোমায় মুক্তি দিলাম - না পাওয়ার বেদনার মাঝে মুক্তি খুঁজে নিলাম!
তুমি থেকো তোমারই মতো - উড়ন্ত পাখি হয়ে!
অক্লান্ত পথিক আমি হাঁটব - অজানা পথে!
অকূল পাথারে আমি হারাব নিজেকে - মহাসত্যের কূলে আমি খুঁজে পাব তোমাকে!
হিয়ার প্রতিটি মর্ম পীড়ায় বাজবে তোমারই সূর - আমি তথায় উন্মত্ততার নৃত্যের মাঝে বিভোর!
স্বর্গ সূধা না পাওয়ার মাঝে তাই যেনেছি আজ - নিজের ভেতর সাজবো আমি চরম বেদনার সাজ!
প্রাপ্তি আমার তাতেই যে হয় জীবন দিয়ে জেনেছি - হারবো না আর কারো কাছে আজ নিজের কাছেই হেরেছি! 
                - অসমাপ্ত -

বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

ইনসাফ

রক্তের সম্পর্ক আপন
কিংবা পর ইনসাফ নাই আর
বে-ইনসাফের শহরে 
ইনসাফ খোঁজা বেকার।

নিজ সার্থের কাছে যারা 
বিবেক দিয়েছে বলিদান 
তাদের সাথে না হোক
স্বর্গ নরক বাসস্থান! 

#saju

শনিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২২

দম-----

হাওয়ার পাখি হাওয়া তত্ত্বঃ হাওয়া ৩ প্রকার
১.রেসক ২.পূরক ৩.কুম্ভুক,
ধরো চোর হাওয়ার ঘরে ফাদ পেতে হাওয়া কিভাবে ধরবেন,
রেসক মানে= ফেলে দেওয়া শ্বাস ত্যাগ করা পুরক মানে গ্রহন করা শ্বাস ভিতরে প্রবেশ
কুম্ভুক মানে নেবও না, ফেলবও না?(শ্বাস যদি ভিতরে নিয়ে না ফেলেন বা শ্বাস ত্যাগ করে আর ভিতরে না প্রবেশ করান সেটাই কুম্ভুক
হাওয়া দম বেধে ভেলা,
অধর চাঁদ মোর করছে খেলা,
উদ্ধ নালে সদায় চলা,
ও তার কল কলকাঠি ব্রক্ষদ্বারে আছে হাওয়া দ্বারে দম কুঠুরি,মাঝখানে অটল বিহারি?শূর্ণ্যবিহার স্বর্ণপুরি,বহু সাধন গুনে কেউ দেখেছে,
এখানে কি দেখার কথা বলা হয়েছে,যেটা বহু সাধন গুনে দর্শন হয়, এ বিষয়ে প্রবিএ কুরআন কী বলছে, 

তুমি কী দেখনি, আল্লাহ আকাশ থেকে বৃষ্টিবর্ষণ করেন,এতঃপর তদ্দবারা আমি ভিন্ন বর্ণের ফল-মূল উদগত করি।পর্বতসমূহের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন বর্ণের গিরিপথ- সাদা লাল ও নিকষ কালো কৃষ্ণ?সূরা ফাতির আয়াত ২৭.
এটাই সেই রহমতের বৃষ্টি যেটা মানুষের মস্তিক থেকে নিগৃত হয়ে আলিফের মাথা দিয়ে বের হয়?
যে পানির রং তিনটি, লাল, সাদা,কৃষ্ণ? 
মিয়া সাহেব, এই পানিরসাধনা যে করলো না,
তার কোনো ইবাদতই কবুল হবার নয়?
কি ভাবে এই পানিটাকে দমের সাহায্যে কন্টল করে,
ধরে রাখা যায়,গুরু ভজে এই তত্ত্ব আগে করো সার?
আল্লাহ তার প্রবিএ কালামে বলছেন,

হে বনী আদম,তোমরা প্রত্যক নামাজের সময়, 
সাজ্জসজা পরিধান করে নাও?
খাও এবং পান করো, খবরদার অপচয় করো না,আল্লাহ অমৃত ব্যয়িদের পছন্দ করেন না,
সূরা আরাফ আয়াত=৩১.

এটা কোন নামাজ যে নামাজে খাওয়া যায় পান করা যায়,আর সেই নামাজ পড়ার মসজিদি বা কী?
ঐ মসজিদের গুম্বুজের পাশে,
এক দরজায় তিনটা দেখো নালা রইয়াছে,,,
ময়ূর রুপে পাক- পান্জাতন আল্লাহ জিকির করতেছে,,ছায়া বিহীন আল্লাহ পাকে মসজিদ বানাইছে,ঐ মসজিদে বেহেস্তি সু ফল,
প্রথম মাসের প্রথম দিনে আসে অবা-হায়াতের জল(আব মানে পানি,হায়াত মানে আয়ু,যে পানিতে বায়ু যুক্ত থাকে?,,,
পানি পানি সবাই বলে,
পানির হিসাব করে কয় জনা
,পানির অপর নাম জীবন, তারে করিও যতন,অযতনে ফেললে পানি জীবের অকালে মরণ,পানি করিলে নষ্ট পাবি কষ্ট,সুস্থ দেহ রবে না,পরম আত্মা পরম ঈশ্বর তার জলের মধ্যেই ঘর,হাওয়ায় এসে জলে মিশে থাকে নিরান্তর,জল শুকালে মীন পালাবে,পস্তাবিরে ভাই মনা,যে পানিতে জীবের গতি,তার করো সৎগতি,জল শূণ্য যেমন হবে,তেল শূণ্য গাড়ী,লাল মিয়া কয় মুর্খ মতি, গুরু ধরে পানির হিসাব শিখে নাও,,

বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২২

আমি,, দর্শনে কি এমন রহস্য?

👉''আমি'' দর্শনে কি এমন রহস্য লুকিয়ে আছে?"

✍️এই দেহের বাহিরের রুপ দেখে মানুষ মানুষের প্রেমে পড়ে, পাগল হয়, একজন আরেকজন কে পাওয়ার জন্য আত্ম হত্যা পর্যন্ত করে, আবার কেউ কাম রিপুতে জ্বলে উঠে কিন্তু কেউ যদি একবার দেহের ভিতরের রুপ দেখতে পারতো তাহলে সে হয়তো সারাজীবন তাকে পাবার জন্য তার দাসত্ব করত। ঐ রুপের সাথে বুকে বুক মিশিয়ে আলিঙ্গন করার জন্য আহার নিদ্রা ত্যাগ করে এক নিরিখে বন্দেগীতে লিপ্ত থাকতো। অপার সৌন্দর্যময় সেই রুপের পাগলে সে হয়ে যেত 'পাগল'। কারণ আত্মা এক জ্বলন্ত নূরের প্রদীপ। যার আলোতে আলোকিত এই 'মানব দেহ'।
আসলে মানুষ ৬০-৭০-৮০ বছর একটা পরিবারে ক্ষনিকের জন্য আসে, তারপর অনেক মায়া মহব্বত রেখে সবাই কে কাঁদিয়ে একদিন হঠাৎ করে চলে যায়। আর ফিরে আসে না। যে চলে গেল তাকে ঐ পরিবারের কয়জন চিনতে পেরেছে?
যেমন- স্বামী-স্ত্রী বাসর রাত হতে সারা জীবন এক খাটে এক বিছানায় শুয়ে কত কথা, কত ব্যাথা, হাসি খুশি আলাপন করে সাংসারিক জীবন অতিবাহিত করে দিল কিন্তু তারা কি আদৌ স্বামী স্ত্রী ছিল নাকি শুধু দেহের সাথে বসবাসের পরিচয় ছিল। সে হিসেবে মূল তত্ত্বে স্বামী-স্ত্রী খুজে পাওয়া বিরল হবে। কারণ উভয়ের আত্মদর্শন না হলে তাদের কে স্বামী স্ত্রী বলা আর পরগাছা কে গাছ বলা সমান কথা। দেহের মধ্যে কোনটুক স্বামী আর কোনটুক স্ত্রী তা স্বচক্ষে না দেখলে কেউ বলতে পারবে না কার সাথে কে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে।
স্বামী = স্ব+আমি
= আমি+আমি
= আমি। জিব্রাইল নামক ফেরেশতাকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। অথচ আমরা সবাই জানি যে জিব্রাইল ফেরেশতা যতই মর্যাদার অধিকারী হন না কেন, কিন্তু জিব্রাইল ফেরেশতার মাঝে রূহ্‌ও নাই এবং নফ্‌সও নাই। একমাত্র চৈতন্য আত্মার বা রুহের আজ্ঞাবহ বা রুহের বার্তা বাহক হয়ে সে তাহার হুকুম পালন করে থাকেন।
আল্লাহ যদি পূর্বেই সমস্ত রুহ কে সৃষ্টি করে থাকেন অর্থাৎ সব আত্মাই যদি পুরাতন হয়ে থাকে তাহলে এটা নিশ্চিত বলা যায় যে, সকল রুহ বা আত্মা পূর্ব হতেই সকল সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে অবগত রয়েছে। অর্থাৎ সকল আত্মাই জ্ঞানী। যে দেহের মধ্যে রুহ বা আত্মা নেই সে দেহের রহস্য শুন্য, তার মূল্যও শুন্য। আবার সকল আত্মাই যদি "জ্ঞানী" হয় তাহলে সকল শিশু বাচ্চা কেন অবুঝের মত চলাফেরা করে? কেন অজ্ঞানী হয়?
কারণ আত্মা নিজেকে প্রকাশ করতে গিয়ে দেহের মধ্যে নিজেকে আত্ম গোপন করে কিন্তু জ্ঞানী হয়েও দেহের ষড় রিপুর মায়াবী জালে সে প্রতিবন্দী হয়ে যায়। তখন সে মাতাল হয়ে ঘুমের ন্যায় শিকলে আটকা পড়ে আর বলে কেন এলাম এমন ভয়ানক কলকাঠির ঘরে? আমাকে মুক্ত কর এ বেড়াজাল থেকে ! বলতে বলতে মায়ার জালে আবার ঘুমিয়ে পড়ে। একারণে শিশু বাচ্চা ঘুমের ঘরে কখনও কেঁদে উঠে আবার কখনও হেসে উঠে এবং ঘুম ভাঙ্গলে জ্ঞান বিবেক হারিয়ে ফেলে। এই মহাবিশ্বের সঙ্গে বিশ্ব নবুয়াতের এক বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। সেই সুনিবীড় সম্পর্কও আমাদের আত্মা চেতন করে জানতে হবে। তাহলে মহাবিশ্ব এবং বিশ্ব নবুয়তের সঙ্গে মহান স্রষ্টার কি সম্পর্ক তা আমরা জানতে ও বুঝতে পারবো।
সর্বোপরি জীবনের বহু উপরে জীবন্ত কোরআনের সঙ্গে মহাবিশ্ব এবং মহান স্রষ্টার কি সুমধুর সম্পর্ক রয়েছে সে বিষয়ে আমাদের মনের সকল অজ্ঞতা ও অন্ধকার কেটে যাবে।
বাহ্যিক চক্ষু দিয়ে দেখে আমরা মনে করি, আগুন, পানি, মাটি, বাতাসের সমন্বয়ে এই পৃথিবীর এত বিচিত্র বন-বনানী, ফুল, ফল, পাখি, সাগর, নদী, ঝর্ণা, পাহাড়, মরুর অগণিত বালুকারাশি, বিচিত্র জীবগোষ্ঠী সবকিছু ঠিকঠাক মতো তৈরি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অন্তর দর্শন বা রুহানী দর্শন দ্বারা দেখলে আমরা সত্যিকার অর্থেই দেখতে পাবো এই মহাবিশ্বের সবকিছু এক বিস্ময়কর, মহা সৃজন ক্ষমতা সম্পন্ন অনন্ত কারখানার মধ্যে স্থাপন করা রয়েছে। এটা একটা মহাসৌন্দর্যময় মহাব্যবস্থাপনা জগত। এই সৌন্দর্য হলো মহান স্রষ্টা থেকে আগত অনন্ত গুনরাজি ও শক্তিময় নূর বা আলো। আরশ থেকে ভূতল পর্যন্ত সবকিছু সৃষ্টির মূল কারণ এই শক্তি ও সৌন্দর্যময় আলো।
জন্মের পূর্বে সৃষ্টির রহস্য সম্পর্কে আত্মা জ্ঞানে যদিও পূর্ণ থাকে তবু তার পিছনের কর্মফল তাকে চম্বুকের মতে টেনে নিয়ে যায় পরবর্তী ফলস্বরুপ দেহ ঘরে। মানব দেহতে এসে সৃষ্টির সর্ব প্রথম নিজের জ্ঞান প্রকাশ করতে গিয়ে আত্মা নিজেই নিজেকে ধোকা দিতে শুরু করে এবং এভাবে চলতে চলতে এক দেহের কর্মফল তাকে আরেক দেহতে গিয়ে ভোগ করতে হয়।
সুতরাং যদি সকল আত্মাই পুরাতন হয় এবং নতুন সৃষ্টি কেউ না হয়ে থাকে, তাহলে বলা যায় -- আত্মাকে আবার নতুন করে কেন জ্ঞান অর্জন করতে হয়?
যেহেতু জ্ঞান দিয়েই তৈরী হয়েছে আত্মা অর্থাৎ আত্মাই জ্ঞান সেহেতু জ্ঞান অর্জনের বিষয় নয় , জ্ঞান জাগ্রত করার বিষয় , উপলব্ধির বিষয়। জ্ঞান মানুষের অন্তরে ঘুমন্ত, জ্ঞানে মানুষের আত্মা পূর্ণ, প্রয়োজন কেবল আত্মা জাগ্রত করা, আত্মা কে চেতন করা। তাই ফকির লালন শাঁইজী বলেছিলেন-- আত্মা রুপে কর্তা হরি; আবার -- আত্মা চেতন হলে জানতে পাবি।
আত্মার এই জ্ঞান থাকে সুপ্ত বা ঘুমন্ত সেই জ্ঞান জাগাতে হয় । আত্মার জ্ঞান পূর্ণ জাগ্রত হলেই আত্মা পূর্ণ শক্তিশালী হয়ে উঠবে,আত্মা পাবে তার কাঙ্খিত পূর্ণতা । আত্মার জ্ঞান পূর্ণ জাগ্রত করতে পারলেই মিলবে মানুষের পূর্ণ মুক্তি তখন মানুষের বা আত্মার
কোন সীমাবদ্ধতা থাকবেনা । আত্মা হয়ে যাবে পূর্ণ শক্তিশালী পূর্ণ স্বাধীন।
যেমন: সালাত অর্থ স্বরণ করা।
এই স্বরণ শুধু হাতে গুণা পাঁচ ওয়াক্তে টাইম মাফিক নয়, পাঁচ ওয়াক্ত হচ্ছে প্রাথমিক ট্রেনিং। এই ট্রেনিং এ পাশ করার পর প্রতিটা দমে দমে আল্লাহ কে স্বরণ করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে এবং যিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এমন একজন মহা মানবের নিকট শপথ গ্রহণ করে স্বরুপ কে প্রতিষ্ঠিত করার উপায় খুজে বের করতে হবে। অত:পর এই স্বরণ এমন হতে হবে যে, স্বরণ করতে করতে মহা সত্ত্বার সাথে সংযোগ হয়ে আপন সত্ত্বা জাগ্রত হয়ে উঠবে। সত্ত্বা অর্থ আত্মা। সুতরাং মহাসত্ত্বা বা মহা আত্মার সাথে সংযোগ করে আপন আত্মাকে জাগ্রত করাই সালাত। আর আপন আত্মা য্খন চেতন হবে শুধু তখনই সালাত কায়েম হবে।
আবার পূজা অর্থ = পূ + জা
= পূণ + জাগরণ
অর্থাৎ আপন আত্মাকে পূণরায় জাগরণ করাই পূজা। এখানে আত্মা দেহমুক্ত অবস্থায় পূর্বে জাগরণ ছিল, দেহের মধ্যে ঐ ঘুমন্ত আত্মাকে আবার পূণরায় জাগরণ করতে বলা হয়েছে। আর ইহাই প্রকৃত ঈশ্বর পূজা।
আর আত্মাকে পূর্ণ জাগ্রত করতে হলে আরেকটা জাগ্রত আত্মার সাথে তথা কামেল মুর্শিদী আত্মার সাথে পরশ বা ঘর্ষণ পাওয়ার জন্য তার সোহবত গ্রহণ করতে হবে।
এজন্য মুর্শিদ ধরিবার আছে প্রয়োজন। মুর্শিদী আত্মারুপ দেখিবার করিতে হয় সাধন। একবার যদি হয় দেখাদেখি করণ। মুর্শিদী আত্মার রুপের আলোতে নিজ আত্মার রুপ হবে দর্শন তথা স্ব-রুপ আত্মা হবে জাগরণ এবং এমনাবস্থায় কেউ নিজেকে রাখে গোপন আবার কেউ ভাব হারিয়ে সদায় করে উচ্চারণ--
"একমাত্র আমি-ই ছিলাম এক, আমি-ই আছি এক, আজ শুধু আমি-ই জাগ্রত এবং আমি-ই কাঙ্খিত মহা দর্শন।
এমনাবস্থায় সাধকের দেহের ওজনের পরিমাণ শূন্য হয়ে যায় এবং ইচ্ছানুযায়ী সে শূন্যে উড়ে বেড়ায়। তখন সে মনের আনন্দে বলতে থাকে

"তুমি" দর্শনে পেয়েছি "আমি" দর্শন
"আমি" দর্শনে পেয়েছি "তুমি" দর্শন
নয়ন ভরে দেখেছি এই বিশ্ব ভুবন""
কে তুমি - কে আমি নাইকো আজ বিভাজন ""
যতদিন গুরু রুপের ধেন
গুরুর আত্মারুপ দর্শন না হবে
ততদিন নিজ আত্মার স্বরুপ দর্শন
অদেখা রবে।
যতদিন মনের মানুষকে না দেখিবে
ততদিন নামে মাত্র মুরিদ হয়েছি
নিজেকে জানিবে।

- সুফীবাদ -

বুধবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২২

সেজদা ১ম পর্ব

#তাজিম_সেজদা (পর্ব—১)

ছিলনা সৃষ্টির আদিতে কোন চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র, আরশ কুরশী, লৌহ, কলম, জ্বিন-ইনসান, গাছপালা, তরুলতা, পশুপাখি ইত্যাদি। মহা শূন্যময় নিথর নিস্তব্ধ ছিল এ বিশ্ব চরাচর। কারণ শূন্য অবস্থায় মহাশূন্যের গর্ভে গোপন ছিলেন আল্লাহতায়ালা। আপন হতে আপনিই প্রকাশ হলো ইরাদা, পঞ্চ আলম সমষ্টি করে। তিনি প্রকাশিবেন, বিকাশিবেন, তাঁর গোপন প্রেম ব্যক্ত করবেন, খেলবেন ইশকের খেলা তথা আশেক ও মাশুকের খেলা, নিবেন আপন পরিচয়, দেখবেন স্বীয় গোপন মোহনীয় জ্যোতির্ময় রূপ। তাই আপনা হতেই আপনি প্রকাশ করলেন আহামদী নূর, এ সৃষ্টি রূপান্তর সৃষ্টি, প্রভেদ কেবল দু’টি অবস্থা। এ নূর সৃষ্টির পর আল্লাহপাক বলেনঃ “লাওলাকা লামা খালাকতু আফলাক” অর্থাৎ আপনাকে সৃষ্টি না করলে আমি কিছুই সৃষ্টি করতাম না। আর হযরত রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ “আনা মিন নূরীল্লাহ ওয়াল খালকো কুল্লুহিম মিন নূরী” অর্থাৎ আমি আল্লাহর নূর হতে এবং সমস্ত সৃষ্টি আমার নুর হতে সৃষ্টি। এ সৃষ্টির বিবর্তনের ধারায় “আহাদ” এর সাথে “মীম” সংযুক্ত হয়ে হলো “আহামদ” তথা মীমের পর্দায় “আহাদ” লুক্কায়িত হলো। হযরত রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ “আনা আহমাদুল বেলামীম” অর্থাৎ আমি মীম ছাড়া আহামদ তথা তিনিই আহাদ এবং তিনিই আহামদ। এ “আহামদ” নযুলের ধারায় তথা প্রকাশিত ধারায় দ্বিতীয়বার মীমের পর্দায় আবৃত হয়ে হলো “মোহাম্মদ” তথা “আহাদ” স্থিত অবস্থা হতে উপস্থিত হলো মোহাম্মদ (সাঃ) তথা আহাদ হতে মোহাম্মদ পর্যন্ত “মীমের” পর্দায় আবৃত এবং মীমের পর্দায় আবৃত অবস্থাটি রূপান্তর প্রকাশ [খালাক] যা মোহাম্মদ (সাঃ) রূপে প্রস্ফুটিত হয়েছে ধরায়। এ জন্যই কোরআনে আলিফ-লাম-মীম এ তিনটি হরফে মুকাত্তায়াত এর মধ্যে “মীমের” উপর তাশদীদ দেখানো হয়েছে- যার দ্বারা রূপান্তর সৃষ্টির ধারাটি বিকাশমান বুঝাচ্ছে। আল্লাহ পাক তাঁর রূপান্তর সৃষ্টি মঞ্জিলে দাখিল [আলিফ-দাল-মীম] হয়ে “হামদ” [প্রশংসা] করছে এবং এ অবস্থায় “আহামদ” তাঁর আদি অবস্থার অভিমুখে লক্ষ্য করে প্রশংসা করছে ও তাঁর স্রষ্টা বলে স্বীকার করে নিয়ে তাঁর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করছে [বায়াত স্বীকার করছে]। শুরু হল আহাদ ও আহামদের মাঝে আশেক মাশুকের খেলা তথা গুরু-শিষ্যের খেলা এখানেই হলো বায়াতের আদি ইতিহাস। আশেক মাশুকের খেলা কি করে প্রকাশ করবেন তারই পরিকল্পনা প্রকাশ হলো তার ইরাদার মাধ্যমে। সৃষ্টি করলেন জামাদাত, নাবাদাত, হায়ানাত তথা আরশ, কুরশী লৌহ, কলম, গ্রহ-নক্ষত্র, চন্দ্র-সূর্য, গাছপালা, তরু-লতা, পশু-পাখি, জ্বিন-ফেরেশতা ইত্যাদি। কিন্তু কারো মাঝেই গোপন ভেদ রহস্য প্রকাশ হলো না, প্রজ্বলিত হলো না স্রষ্টার পরিচয় তাই নিহিত সেই প্রেম রহস্য। আল্লাহ পাক বেচ্যান, বেকারার হয়ে আঠারো হাজার মাখলুকাতের সমষ্টি করে এক রহস্যময় সৃষ্টির ইরাদা করলেন এবং সেই রহস্যময় সৃষ্টিই হল মানুষ- যা আল্লাহর ইরাদা ও গোপন প্রেমের মূর্তরূপ। আল্লাহপাক স্বীয় পরিচয় ও প্রেম বিকাশিত করার জন্য সৃষ্টি করলেন স্বীয় সিরাত ও সুরতের সমষ্টি করে এ মানুষকে। 

বৃহস্পতিবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২২

অধিকাংশ মানুষ কোন পথে?

এক শিষ্য বলল, ‘আপনার কথাগুলো যখন আমি লোকদের বলি তখন অধিকাংশ লোক আমাকে ‘ধর্মদ্রোহী’ ও ‘কাফের’ বলে গালি দেয়। বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে এই ধরনের অপবাদ পেলে আমার খুব খারাপ লাগে। এই খারাপ লাগা দূর করার উপায় বলে দিন গুরুজি‘।
গুরু বললেন, ‘অধিকাংশ মানুষ যাকে ধর্ম বলে, তা বর্জন কর।  অধিকাংশ লোক যাকে ধর্মদ্রোহিতা ও কুফুরি বলে, তা বেশি বেশি করতে থাক’।
শিষ্যের চোখে-মুখে গুরুর বচনে অনাস্থাভাব দেখা দিল। গুরু তখন ডান পাশ থেকে কুরআন হাতে নিয়ে বললেন, ‘সুরা বাকারার ১০০নং বলা আছে, অধিকাংশই কুরআন বিশ্বাস করে না। সুরা মায়েদার ৪৯ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘অধিকাংশ মানুষ নাফরমান’; একই সুরার ১০৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘অধিকাংশ মানুষের বিবেক বুদ্ধি নেই’।  সুরা আনআমের ১১১ নং আয়াতে বলা হয়েছে,  ‘অধিকাংশ মানুষ মুর্খ, অজ্ঞ’। 
সুরা আরাফের ১৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘অধিকাংশ মানুষ অকৃতজ্ঞ’; একই সুরার ১০২ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘অধিকাংশ লোক ফাসিক’ এবং ১৩১ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘অধিকাংশ মানুষই জানে না’। সুরা তওবার ৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘অধিকাংশ লোক প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী’। সুরা ইউনুসের ১০ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘অধিকাংশ লোক আন্দাজ-অনুমানের উপর চলে’। সুরা ইউসুফের ৩৬ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘অধিকাংশ লোক ধারনার অনুসরণ করে’ এবং ৬৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘অধিকাংশ মানুষ প্রকৃত ব্যাপার সম্পর্কে অবগত নয়’; একই সুরার ১০৬ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে’। সুরা আম্বিয়ার ২৪ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘অধিকাংশ মানুষ সত্য জানে না’ এবং সুরা মুমিনুনের ৭০ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘ অধিকাংশ মানুষ সত্য অপছন্দ করে’। সুরা ফুরকানের ৪৪ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘অধিকাংশ মানুষ চতুস্পদ জন্তুর মতো; বরং আরও নিকৃষ্ট’। সুরা শুআরার ২২৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘অধিকাংশই মিথ্যাবাদী’ । সুরা সফফাতের ৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর আয়াতকে বাঞ্চাল করার চেষ্টা করে’ এবং সুরা মুমিনের ৫৬ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তারা আল্লাহর আয়াত নিয়ে বিতর্ক করে। সুরা ফুরকানের ৫০ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘অধিকাংশ লোকই কুফুরি করে’।
সুরা আনআমের ১১৬ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘সুতরাং তুমি যদি অধিকাংশ লোকের অনুসরণ কর তাহলে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করে ফেলবে’। 
সুরা আরাফের ১৭৯ নং আয়াতে বলা আছে, ‘অধিকাংশ মানুষ জাহান্নামি হবে’। 
৭৩ কাতারের মধ্যে ৭২ কাতারই জাহান্নামি। 
ইহকালে যারা অধিকাংশ লোকের অনুসারী হয়, পরকালেও তারা অধিকাংশ লোকের অনুসারীই হবে।

রবিবার, ২ জানুয়ারী, ২০২২

গান বাজনার দলিল প্রমাণ সহ

গান বাজনা জায়েজের দলিল প্রমান সহ।

যে গান কু-প্রবৃত্তি জাগায় সে গান নাজায়েজ। যে গান আল্লাহর কথা মনে করিয়ে দেয়, ভাল কাজের প্রেরনা জোগায় সে গান জায়েজ।

পবিত্র কোরানে এবং হাদিসে গান বাজনা নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ন তথ্য আছে! তাই আমরা গান বাজনাকে হারাম বলার আগে তা আলোচনা করে নিজেদের উক্তি দেওয়া উচিত।

আল্লাহ এবং তার রাসূলের ভক্তদের জন্য গান বাজনা তাদের আত্মার খোরাক। যদি আনন্দ, ফুর্তির জন্য গান বাজনা করা হয়, তা হারাম বলে গন্য হবে!!!

নিম্নে গান বাজনা সম্পর্কে কিছু দলিল দেওয়া হলোঃ

১) আমার রাসূল (সাঃ) এর ইন্তেকালের আগে তার ঋন ক্ষমা চাওয়ার জন্য বিল্লাল তার গলায় ঢোল নিয়ে, ঢোল বাজিয়ে রাসূলের ঋন ক্ষমা চেয়েছিলেন সেদিন! সাক্ষী তার (তাওয়ারীতে মোহাম্মদী)

২) খাজা মইনুদ্দীন চিশতী বড় পীরকে গান শুনিয়েছিলেন, নিশ্চয় রাসূলে খোদা পুরুষ প্রধান,, মহা গুনে গুনান্নিত মহা মহিয়ান!! সেদিন আকাশ, জমিন একসাথে নৃত্য করেছিলো খাজা বাবার গানের ছন্দে, সাক্ষী তার (তাযকেরাতুল আউলিয়া) ৪র্থ খন্ড!!

৩) মুসলমানদের জানমালের হেফাযতে রাসূল বিল্লালকে সুসংবাদ দেওয়ার জন্য অনুমতি দিলে, বিল্লাল গলায় ঢোল নিয়ে তা প্রচার করেছিলো! সাক্ষী তার (বুখারী শরীফ) ৩য় খন্ড ১৯ পৃষ্ঠা!!

৪) রাসূলের নির্দেশে সেদিন বিল্লাল তার গলায় ঢোল নিয়ে মদকে নিষেধ করেছিলো, কিন্তু ঢোলকে নয়! সাক্ষী তার (বুখারী শরীফ) ষষ্ঠ খন্ড ৭৩ পৃষ্ঠা!!

৫) খাজা বাবা এবং তার পীর ওসমান হারুনি, খানকার মজলিসে বসে গান শুনতেছিলেন! আসরে ৯ব্যক্তি ছিলো তার মধ্য ২ ব্যক্তির শুধু পোশাক ছিলো, কিন্তু তারা ছিলো না! খাজা বাবা তার পীরকে জিজ্ঞেস করলে, ওসমাম হারুনি বলেন! তারা এস্কের জিকিরে খোদার জাতের সাথে লয় হয়ে গেছে! তারা আর কখনো এ পৃথীবিতে ফিরে আসবে না। সাক্ষী তার (আনিসুল আরোহা) ৮৮ পৃষ্ঠা!!

৬) রাসূল (সাঃ) যখন মক্কা থেকে মদিনায় এসেছিলেন হিযরত করে! মদিনার মেয়েরা সেদিন ঢব বাজাইয়া রাসূলকে গান শুনিয়েছিলেন! রাসূল সেদিন গান কে হারাম বলেন নি,! সাক্ষী তার (বুখারী শরীফ) ৫ম খন্ড, ২২২পৃষ্ঠা!!

৭) আনসারী মেয়েরা আমার রাসূলের হিযরতের সময় নৃত্য করে গান গেয়ে শুনিয়েছিলেন! সেদিন রাসূল নিজেই আনন্দিত ছিলেন! সাক্ষী তার (বুখারী শরীফ) ৫ম খন্ড ২২৩পৃষ্ঠা।
৮) রাসূল (সাঃ) যখন মা আয়েশার ঘরে গভীর ঘুমে মগ্ন ছিলেন, তখন মদিনার মেয়েরা নৃত্য করে গান গেয়ে নবীর ঘুম ভেঙ্গে দিয়েছিলেন! আবু বক্কর মেয়েদের ধমক দিয়ে থামিয়ে দিতে গেলে, রাসূল তখন আবু বক্কর (রাঃ) কে ধমক দিয়ে তাদের গাওয়াকে উৎসাহ দিয়েছিলেন! সাক্ষী তার (বুখারী শরীফ) ১ম খন্ড ২৭৭পৃষ্ঠা!!

৯) একদিন জিব্রাঈল রাসূলকে সংবাদ দিলেন, তার গরীব উম্মৎ গন ধনী উম্মতদের ৪শত বছর আগে জান্নাতে যাবে! সেদিন রাসূল খুশি হয়ে বলেছিলেন, তোমাদের মধ্য কে গান জানো? তখন বধুবী নামক এক ব্যক্তি রাসূল সহ ভরা মজলিসে গান গেয়ে শুনিয়েছিলেন! সাক্ষী তার (কুৎনীত শরীফ) ৩৩৭পৃষ্ঠা!!

১০) রাসূল মূসা নামক তার এক সাহাবীর কন্ঠে গান শুনে, সেদিন বলেছিলেন হে মূসা নিশ্চয় দাউদ নবীর বংশ হতে আমার আল্লাহ তোমাকে এই সুর দিয়েছেন! সাক্ষী তার (মূল বুখারী শরীফ) ৭৫৫পৃষ্ঠা!
১১) সায়মা নামক এক মহিলা আমার রাসূলকে কোলে নিয়ে গান গেয়েছিলেন! সাক্ষী তার (বুখারী শরীফ) ৫ম খন্ড ৫৩-৫৪ পৃষ্ঠা পর্যন্ত তার ব্যাখ্যা দেওয়া আছে!

১২) পবিত্র কাবা তোয়াফ কালে এক রমনী জুনায়েদ বোগদাদী কে গান গেয়ে শুনিয়েছিলেন! সাক্ষী তার (তাযকেরাতুল আউলিয়া) ৩য় খন্ড ১৩৭পৃষ্ঠা!!

১৩) মসজিদে নববী তৈরি করার সময় আমার রাসূল নিজেই তারানা গেয়েছিলো! সাক্ষী তার (বুখারী শরীফ) ৬ষ্ঠ খন্ড ১৯৮ পৃষ্ঠা।

উপরের দলিল গুলো যদি আপনাদের বিশ্বাস না হয়, তাহলে আপনারা নিজেরাই পড়ে দেখতে পারেন! তবে হ্যাঁ শরিয়তের ইবাদত – নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাতের বেলায় গান বাজনা নিষেধ আছে! কারন তুমি আমার আল্লাকে যেভাবে, যে অবস্থায় স্বরন করো আমার আল্লাহ তাতেই সাঁড়া দিবে।

সেমা/সংগীতের প্রশংসা ও সমর্থনসূচক কিছু হাদিস মৌজুদ আছে।

নিচে কিছু সহীহ হাদিস শরীফের রেফেরেন্স দেওয়া হলঃ

  • বোখারী শরীফ ১ম খণ্ড ১৩৫ পৃঃ,
  • নেসায়ী শরীফ ১ম খণ্ড ১৮১ পৃঃ,
  • মুসলিম শরীফ ১ম খণ্ড ২৯১ পৃঃ,
  • বোখারী শরীফ ১ম খণ্ড ১৩০ পৃঃ,
  • মেশকাত শরীফ ২৭৩ পৃঃ,
  • তিরমিজী শরীফ ১ম খণ্ড ২০৭ পৃঃ,
  • মেশকাত শরীফ ৫৫৮ পৃঃ,
  • মেশকাত শরীফ ২৭২ পৃঃ,
  • নেছায়ে ২য় খণ্ড ৭৫ পৃঃ,
  • বোখারী শরীফ ২য় খণ্ড ৭৭৩ পৃঃ, (১২), মেশকাত শরীফ ২৭১ পৃঃ,
  • মুসলিম শরীফ ১ম খণ্ড ২৯২ পৃঃ,
  • বোখারী শরীফ ২য় খণ্ড ৭৭৫ পৃঃ,
  • তাফসীরে আহমদি-৪০০ পৃঃ,
  • ইবনে মাজা-১৩৮
  • বোখারী শরীফ ২য় খণ্ড ৭৫৫ পৃঃ, (১৮)

আরো হাদিসঃ

১। আবু মুসা রাসুল পাক (স.) এর একজন সাহাবী ছিলেন। তিনি সুমধুর সুরে গান করিতে পারিতেন এবং রাসুলপাক (স) কে সময়
সময় গান শুনাইতেন।তাই তার গানের সুরের প্রশংসা করে নবী পাক (স) বলেন, “হে আবু মুসা ,নিশ্চয়ই দাউদের বংশধরের সঙ্গীত হইতে তোমাকে সঙ্গীত প্রদান করা হইয়াছে ।” ( বুখারী শরীফঃ ৭৫৫)

২। হযরত আয়েশা (র) হইতে বর্ণিত যে, আমি একটি স্ত্রীলোকের বিবাহ আনসারের একটি লোকের সাথে করিয়া দিলাম। তখন রাসুল পাক (স) ফরমাইলেন ” তোমাদের নিকট কি কোন গানের বন্দোবস্ত নাই? কারন আনসারগন গান ভালোবাসেন। (বুখারী -রাবি আশায়াতুল লোমায়াত শরহে মিশকাত,৩য় খণ্ড -সোহবত অধ্যায়ের ১০৮ পৃষ্ঠা ), (তাফসীরে আহমদি-৪০১ পৃঃ)।

সেমা/সংগীতের প্রশংসা ও সমর্থনসূচক নিচের কিতাব গুলি দেখুনঃ
  • ইহইউয়াউল উলুম কিতাবে (লেখকঃ ইমাম
    গাজ্জালী রঃ),
  • আওয়ারিফ কিতাবে (বলছেনঃ শেখ সাহাব উদ্দিন সোহরাওয়ার্দী (রঃ)।
  • ইজাজ কিতাব (ইমাম আবু হানিফা রঃ এর সমর্থন),
  • কশফ কিতাবে, ওমদাতুলকারী কিতাবে (ইমাম মালেক রঃ

শানে মাওলা, নাতে রাসুল, শানে মোর্শেদ, শানে অলী-আল্লাহ, শানে নবী রাসুল ইত্যাদী সম্পর্কিত গান ১০০% জায়েজ।

সুতরাং যে গান মানুষের মনুষ্যত্ব জাগিয়ে আল্লাহর পথে পরিচালিত হওয়ার প্রেরনা জোগায় তা সম্পুর্ন জায়েজ। আর যে গানে অপসংস্কৃতি, বিনোদন, এবং ইসলামকে কটাক্ষ করে তা হারাম।