আল কুরআনে জন্মান্তরবাদ (২য় পর্ব)
*********************************
প্রথম পর্বে জন্মান্তরবাদ নিয়ে যখন কোরানিক ডকুমেন্ট উপস্থাপন করলাম তখন বাজারে বিক্রি হওয়া সস্তা তরজমা পড়ে পণ্ডিত জ্ঞানী আরবী প্রেমিকরা আমার ব্যাখ্যার ভুল ধরতে কোন সময় নেয়নি, অথচ আমি বলেছিলাম দাদা, একটু বুঝার চেষ্টা করুন আল্লাহ সরাসরি বলেছেন মৃত্যুর পর পৃথিবীতে জীবিত করেন এই কথাটা স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন কোন ইশারা ইঙ্গিত উদাহরণ দিয়ে বলেন নি। তাছাড়া সুরা রুমের ঐ আয়াতটা মুহকামাত তথা স্পষ্ট হুকুমত।
আয়াতে মুহকামাতকে পেচিয়ে মনের মত করে ভাবার কোন সুযোগ নেই কারন ওটা স্পষ্ট ঘোষণাপত্র।
সুরা মায়িদার ১৫ নং আয়াতে আল্লাহ পবিত্র কুরআন সম্পর্কে বলেছেনঃ
وكتب مبن
ওয়া কিতাবুম মুবিন
অর্থঃ এবং আমি স্পষ্ট গ্রন্থ পাঠিয়েছি মানে কুরআন স্পষ্টভাষী তাতে ভাবের কিছুই নাই।
প্রিয় দরদী সকল যে গ্রন্থ অধ্যয়ন করে আমি হেদায়ত খুঁজবো সেটা যদি ভাবের হয় স্পষ্ট কোন দিক নির্দেশনা না থাকে তাহলে সারা জীবন পড়লেও আমি পথের দিশা পাবনা সুতরাং কুরআন একটি স্পষ্ট গ্রন্থ, নিজের মন মত তাকে বুঝা যাবেনা।
যাই হোক এরকম আরো অনেক ডকুমেন্ট জন্মান্তরবাদের উপর আছে কিন্তু অন্তরদৃষ্টির অন্ধত্বের কারনে আমরা খুঁজে পাইনা, নিজের মানসিক সংকীর্নতার কারনে নিজে বুঝার চেষ্টাও করিনা। বেতন ভুক্ত কর্মচারী তথা আরবী শিক্ষিত মোল্লা মুন্সির বয়ান শুনে সুবাহান আল্লাহ শব্দের ঢেউ তুলে স্বর্গের দরিয়া পার হয়ে যাই।
আজ আরেকটি দলিল দিচ্ছি কুরআন থেকে যে আয়াতটির সাথে পৃথিবীর সব মুসলিমরাই পরিচিত। অথচ এর সঠিক অর্থ জানেনা বলেই অধিকাংশ মানুষ গাফেল হয়ে আছে। আল্লাহ পবিত্র কুরআন শরীফে ঘোষনা করেনঃ
منها خلكنكم وفيها نعيدكم ومنها نخرجكم تارة اخراي
সুরা ত্ব - হা আয়াত ৫৪
অর্থঃ মিনহা খালাকনাকুম- আমরা তোমাকে যেখান থেকে সৃষ্টি করেছি, ওয়া ফিহা নুয়িদুকুম - এবং সেখানে তোমাকে আহ্বান করবো, ওয়া মিনহা নুখরিজুকুম - এবং সেখান থেকেই তোমাকে বের করে দিব, তারাতান উখরা- যেন অন্যান্য বা বিভিন্ন বিষয় দেখতে পারো। তারাতান শব্দের অর্থ দেখতে পারা আর উখরা শব্দের অর্থ বিভিন্ন বা অন্যান্য ইত্যাদি।
প্রিয় পাঠক বৃন্দ উপরোক্ত আয়াতের হুবহু অনুবাদটাই আমি করলাম আপনিও ডিকশনারী খুলে শব্দের অর্থ জেনে নিয়ে মিলায়ে নিতে পারেন।
উক্ত আয়াত পৃথিবীর সব মুসলিমরাই মৃত দেহ দাফন করার সময় পাঠ করে এই জন্য যে তুমি যেখান থেকে এসেছ সেখানে আবার পাঠিয়ে দিলাম আবার আসবে যাবে এই সিস্টেম। এখানে আয়াতের মধ্যে মাটি কিংবা সৃষ্টির কথা কোথাও নাই, যদি কোন পণ্ডিত দেখাতে পারে সারা জীবন তার পদতলে গোলামী করবো।
আল্লাহ জাল্লা তায়ালা আমাকে সৃষ্টি করে কিংবা আমার রুহ তথা শক্তিটা যেখানে রেখেছেন সেখান থেকেই পাঠিয়েছেন আবার সেখানেই নিয়ে যাবেন সেখান থেকেই আবার বের করে দিবেন পৃথিবীতে বিচরনের উদ্দেশ্যে।
অনেকেই বলেন ওয়া মিনহা নুখরিজুকুম দ্বারা কবরের জীবনকে বুজিয়েছেন কিন্তু খারাজা শব্দের অর্থ বের করে দেওয়া, আর এখানে বলা হয়েছে আমরা আবার তাকে বের করে দেই। সুতরাং রুহের জগত থেকে বের করে আবার পৃথিবীতে বিচরনের কথাই বলা হয়েছে। পবিত্র কুরআন শরীফের ভাষায় তাই পরিলক্ষিত হয় এবং পৃথিবীর আবহমান কাল থেকে আবর্তের মাপকাঠিতে একথাই প্রমানিত।
কিন্তু মাথা মোটা ধর্ম বেপারীরা গবেষণা করতে আদৌ রাজি না হয়ে গবেষকদের ফতুয়ার রোষানলে পতিত করার ব্যর্থ অপচেষ্টা করে যুগে যুগে কালে কালে ধর্মকে শুধুই কলুষিত করেছে, আর গবেষকরা হয়েছে মহিমান্বিত।
প্রিয় পাঠক বৃন্দ ৩য় পর্বে জন্মান্তরবাদ নিয়ে মারিফত পন্থিদের ও কিছু মিথ্যা তত্ত্ব তুলে ধরার প্রচেষ্টা করবো।
সংগেই থাকুন,
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন