বৃহস্পতিবার, ২৮ জুন, ২০১৮

ভুল সবই ভুল প্রথম পর্ব

"ভুল সবই ভুল" -- (পর্ব - ১)
প্রসঙ্গ : নামাজ
যে হাদিসটি ওয়াক্তিয়া নামাজের একমাত্র ভিত্তি, সেটা নিয়ে কিছু আলোচনা করতে চাই । সাধারণত হযরত আনাস হতে বর্ণিত হাদিসটিকে কেন্দ্র করেই ওয়াক্তিয়া নামাজের কথা বলা হয়ে থাকে । কিন্তু চোখ কান খুলে একটু গবেষণা করলেই হাদিসটির সত্যতা সম্পর্কে আসল আর নকল বিষয়টি পরিষ্কার ধরা পড়ে যায় । আল্লাহ সুযোগ সময় কিছু চিন্তা না করেই অবিবেচকের মত বান্দার উপর ৫০ ওয়াক্ত নামাজ চাপিয়ে দিলেন, আর মহানবীও (স.) অজ্ঞ, অবোঝ ও সুবোধ বালকের মত তা নিয়ে চলে আসার পথে বুদ্ধিমান নবী মুসার (আ.) নির্দেশে আবার ফেরত গিয়ে ৫ ওয়াক্ত কমিয়ে ৪৫ ওয়াক্ত নামাজ আনলেন । একইভাবে নামাজ নিয়ে আসার পথে আবারও মুসা নবীর সাথে দেখা হলো এবং পূর্বের ন্যায় মহানবী ও আল্লাহ একই ভুল করাতে মুসা নবী আবারও মহানবীকে অনুরোধ করে বুঝিয়ে দিলেন নামাজ কমিয়ে আনার জন্য । এমনিকরে প্রথমবার ৪৫ ওয়াক্ত, দ্বিতীয়বার ৪০ ওয়াক্ত, পরে ৩৫ ওয়াক্ত, এভাবে ৩০, ২৫, ২০, ১৫, ১০ ওয়াক্ত সব মিলিয়ে ৪৫ ওয়াক্ত কমিয়ে অবশেষে ৫ ওয়াক্ত করলেন । বিষয়টি লক্ষ্য করুনঃ মুসা নবীর নির্দেশে নবীদের সর্দার হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা (স.) এরূপ ৯ বার আসা যাওয়া করে উম্মতের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নিয়ে আসলেন । যদিও মুসা নবী আল্লাহ ও মহানবীর সর্বশেষ সিদ্ধান্ত ৫ ওয়াক্তেও অবজেকশন দিয়েছিলেন অর্থাত্‍ আপত্তি জানিয়ে ছিলেন । বন্ধুগণ, যদি হাদিসটি সত্য বলে ধরে নেয়া হয় তবে আল্লাহর চরিত্র এবং মহানবীর চরিত্রকে অতিশয় ছোট করা হবে । আর আল্লাহ ও মহানবীর সিদ্ধান্তে বার বার অবজেকশন দেয়ার অপরাধে হযরত মুসা নবীকে (আ.) চরম বেয়াদব ও আদব-কায়দাহীন চরিত্রের মানুষ হিসেবে ধরে নিতে হবে (যদিও তাহারা প্রত্যেকেই অতি উত্তম চরিত্রের অধিকারী); হাদিসটিতে নবীদেরকে খোদার আদেশ লঙ্ঘনকারী হিসেবে অঙ্কিত করা হয়েছে; অথচ কোরান বলতেছেঃ নবীগণ আল্লাহর আদেশের তিল পরিমাণ সংযোজন, সংকোচন, অস্বীকার বা প্রতিবাদ করেন না (সূরা হাক্বা); হাদিসটিতে খোদা নিজের কথাকে বহুবার রদবদল করেছেন তাও অল্প সময়ের ব্যবধানে; অথচ কোরান বলতেছেঃ আল্লাহর বিধানে কোন রদবদল হয় না (৩৫:৪৩) এবং আল্লাহর কথা ও কাজে কোন পরিবর্তন হয় না (সূরা আহজাব); হাদিসটিতে দেখা যাচ্ছে খোদা নিষ্ঠুরের ন্যায় তাঁর বান্দাকে সাধ্যাতীত দায়িত্ব চাপিয়ে দিচ্ছেন; অথচ কোরান বলছেঃ আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত দায়িত্ব অর্পণ করেন না (সূরা আরাফ, সূরা বাকারা); এভাবে দেখতে পাই যে, ওয়াক্তিয়া নামাজের এই হাদিসটি কোরানের সম্পূর্ণ বিপরীত । তবে কি মহানবীকে ছোট করার চক্রান্তে এবং আল্লাহ-নবীর দায়েমী সালাতের দর্শনকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে এই হাদিসটি পরবর্তিতে রচনা করা হয়েছিল ? কেননা, হাদিসটিতে মহানবীকে উম্মতের জন্য অযোগ্য, অদূরদর্শী, চরম জ্ঞানহীন রূপে অঙ্কিত করা হয়েছে । পাশাপাশি আল্লাহকেও অবিবেচক, কান্ডজ্ঞানহীন, কথার রদবদলকারী, উম্মতের উপর জুলুমকারী, ওয়াদা ভঙ্গকারী হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে । আর মুসা নবীকে শ্রেষ্ঠ নবী মোহাম্মদ (স.) এবং আল্লাহর চেয়েও জ্ঞানী ও বিচক্ষণ রূপে অঙ্কিত করা হয়েছে । যেহেতু আল্লাহ ও মহানবী যা ঠিকঠাক মতো বুঝে উঠতে সক্ষম হন নাই তা মুসা নবী ঠিকই আগাম জানতে ও বুঝতে পেরেছেন এবং আল্লাহ-নবীর ভুল সিদ্ধান্ত মুসা নবী কর্তৃক ৯ বার সংশোধিত হয়েছে । হাদিসের নামে এটা কি নবী-বিদ্বেষীদের চক্রান্ত নয় ? এটা কি কোন গাজাখুরী, মিথ্যা, বানোয়াট, জাল হাদিস নয় ? তানাহলে যা মুসা নবীর মগজে ঢুকলো অথচ মহানবীর মগজে ঢুকলো না, এমনকি আল্লাহর মগজেও ঢুকলো না কেন ? এত কিছুর পরও যদি হাদিসটি সত্য বলে কেউ ধরে নিতে চায় তবে কোরানের বাণীগুলো মিথ্যা হয়ে যায় এবং আল্লাহ ও মহানবীর চরিত্রের অস্তিত্ব থাকে না, আর যদি হাদিসটি মিথ্যা হয়ে থাকে তাহলে শরিয়তের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের যে বাধ্যবাধকতা বা যে কোন শর্তে অবশ্য পালনিয় তা মিথ্যা প্রমাণিত হল।

লেখাটি সংগৃহিত 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন