বৃহস্পতিবার, ২৮ জুন, ২০১৮

ভুল সবই ভুল। তৃতীয় পর্ব

প্রসঙ্গ : ওয়াক্তিয়া নামাজ
প্রচলিত মতে, শেষ নবী কর্তৃকই নাকি মেরাজ হতে নামাজ আমদানী করা হয়েছে; অথচ শেষ নবীর পূর্ববর্তী সকল নবী-রসুলের আমলেই সালাত পালনের কথাটি কোরান স্বীকার করছে, যথাঃ (২:১৫, ৩:৪৩, ২:৮৩); তাহলে সেই সমস্ত পয়গম্বরগণ তাদের অনুসারীদের কোন নামাজ শিক্ষা দিতেন বা কি ধরণের নামাজ তারা পালন করতেন, যেহেতু পরবর্তীতে শেষ নবী কর্তৃক মেরাজ হতে আনিত সেই কথিত নামাজের কোন অস্তিত্বই ছিল না তখন ? আরও মজার ব্যপার হচ্ছে, পূর্ববর্তী নবীগণের অনুসারীদের মাঝে কোন আনুষ্ঠানিক ওয়াক্তিয়া নামাজ পালনের প্রথা প্রচলিত ছিল না । এ সম্পর্কে ঐশী গ্রন্থ সমূহ- কোরান, ইঞ্জিল, যাবুর তাওরাত এর কোথাও কোন উল্লেখ নেই । সুতরাং, প্রশ্ন হচ্ছে যে, তাহলে সেই সমস্ত উম্মতগণ কোন নামাজ পালন করতেন ? এবং কিরূপেই বা তা আদায় করতেন ? যেহেতু কোরান স্পষ্ট ভাষায় সেই সকল নবীগণের উম্মতদের সালাত পালনের কথাটি স্বীকার করছেন ! আরও লক্ষ্য করুন, নবী মোহাম্মদ (স.) মক্কায় অবস্থান কালেও ওয়াক্তিয়া নামাজ প্রচলিত ছিল না । কিন্তু আশ্চর্যের ব্যপার হলো, কোরানের ১১৪ টি সূরার মধ্যে ৮৬ টি সূরাই মক্কাতে অবতীর্ণ হয়েছে, আর মক্কায় নাজেল হওয়া অধিকাংশ সূরাতেই সালাতের কথা উল্লেখ রয়েছে; তাহলে উক্ত সূরাগুলোতে কোন নামাজের কথা বলা হয়েছে, যেহেতু তখন কোন নামাজই ছিল না ? এ জিজ্ঞাসাগুলোর কোন জবাব আছে কি অনুষ্ঠান-প্রিয় নামাজীদের কাছে ? তবে কি আমরা ধরে নিতে পারি যে, উক্ত আয়াতগুলো এবং কোরানে বর্ণিত সালাত বলতে কোন আনুষ্ঠানিক ওয়াক্তিয়া নামাজকে বোঝানো হয়নি বরং দায়েমী সালাতকে বোঝানো হয়েছে, যা পূর্বেও ছিল এবং এখনও আছে ? কোরান তো বলতেছেঃ অতীতের সব নবীদের ক্ষেত্রেও ছিল একই বিধান, তুমি কখনও আমার বিধানে পরিবর্তন পাবে না (১৭:৭৭);।
আরও বিবেচনার বিষয় হচ্ছে যে, কোরানের যে সমস্ত আয়াতগুলোকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠান-প্রিয় আলেমগণ নামাজের ওয়াক্ত সৃষ্টি করে থাকেন, হাস্যকর বিষয়- সেই সমস্ত আয়াতগুলোতে সালাত শব্দটি নাই । হযরত বড়পীর এবং খাজা বাবা সালাতুল উস্তা বা মধ্যবর্তী সালাত বলতে আসরের নামাজ না বলে অন্তরের নামাজ বলেছেন ।
আরও লক্ষ্য করুন, মহানবীকে মেরাজে নিয়ে যাবার কথাটি কোরানে ঠিকই উল্লেখ আছে, কিন্তু নবী (স.) কর্তৃক মেরাজ হতে আমদানীকৃত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের গুরুত্বপূর্ণ কথাটি কোরানের কোথাও উল্লেখ নাই ।
বলা হয়ে থাকে- এক ওয়াক্ত নামাজ বাদ পড়লে নাকি কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে, অথচ বান্দার সেই অতি গুরুত্বপূর্ণ নামাজের বিষয়টি বিধাতা ভুল করেন এড়িয়ে গেলেন! কিন্তু বিধাতা ভুল করলেও পরবর্তীতে এজিদী রাজ শক্তি ও আব্বাসীয়ারা তাদের পোষা আলেমগণ কর্তৃক কোরানের দায়েমী সালাতের ধর্ম দর্শনকে বাদ দিয়ে উহার স্থলে ওয়াক্তিয়া নামাজকে কোরানের প্রকৃত সালাত বলে চালিয়ে দিতে একটুও ভুল করেনি!

লেখাটি সংগৃহিত 


এবার যে আয়াত দিয়ে ওয়াক্ত করা হয় সেগুলো উল্লেখ করছি

সূর্য ঢলে পড়ার সময় থেকে রাত্রির অন্ধকার পর্যন্ত নামায কায়েম করুন এবং ফজরের কোরআন পাঠও। নিশ্চয় ফজরের কোরআন পাঠ মুখোমুখি হয় (সুরা বনী-ইসরাঈল ১৭:৭৮)”


 অতএব তোমরা আল্লাহর তাসবীহ কর, যখন সন্ধ্যায় উপনীত হবে এবং সকালে উঠবে (৩০.১৭)।আর অপরাহ্নে ও যুহরের সময়ে; আর আসমান ও যমীনে সকল প্রশংসা একমাত্র তাঁরই (৩০.১৮)”

 

“এবং দিবসের দুই প্রান্তভাগে এবং রজনীর প্রথমভাগে সালাত কায়েম কর। কারণ যা ভালো তা অবশ্যই মন্দকে দূরীভূত করে । যারা [তাদের প্রভুকে] স্মরণ করে এটা তাদের জন্য এক উপদেশ (১১.১১৪)”

 

“সমস্ত নামাযের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাযের ব্যাপারে। আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সাথে দাঁড়াও। (সুরা বাকারা ২:২৩৮)”

 

আর স্মরণ করতে থাক স্বীয় পালনকর্তাকে আপন মনে ক্রন্দনরত ও ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় এবং এমন স্বরে যা চিৎকার করে বলা অপেক্ষা কম; সকালে ও সন্ধ্যায়। আর বে-খবর থেকো না (সুরা আরাফ :২০৫)

 

কুরআনের এই আয়াতগুলো দিয়ে ৫ ওয়াক্ত নামাজ বের করা বেশ কষ্ট কল্পনা। ২:২৩৮ আয়াতে বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাজের প্রতি যত্মবান হতে বলা হয়েছে। তাহলে ধরা যায় অন্যান্য নামাজগুলো ‘বিশেষ’ নয় এবং তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই নয় কি?


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন